ভূঞাপুর প্রতিনিধি: ভূঞাপুর উপজেলায় গৃহবধূ প্রমিতি গোস্বামী পুজার মৃত্যু রহস্য উদঘাটনের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে তার পরিবার ও এলাকাবাসী।
রবিবার, ২১ এপ্রিল সকালে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে মানববন্ধন নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী আয়োজিত মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি স্মরণ দত্ত, সাবেক শিক্ষক কালিপদ দে সরকার, নিহত পূজা গোস্বামীর বাবা সত্যরঞ্জন গোস্বামী পিন্টু প্রমুখ।
মানববন্ধনে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বাবু স্মরণ দত্ত বলেন, প্রমিতী গোস্বামী পূজার মৃত্যুরহস্য আইনি প্রক্রিয়ায় দ্রুত উম্মোচন করে দোষীদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
সাবেক শিক্ষক কালীপদ দে সরকার বলেন, পূজা খুবই ভাল ছিল। এই নির্মম মৃত্যু রহস্য উম্মোচন করার জন্য প্রশাসনকে জোর দাবি জানাই।
পূজার মা তার বক্তব্যে বলেন, সম্পূর্ণ পরিকল্পিত মিথ্যা সাক্ষীর ভিত্তিতে পূজার মামলার তদন্ত রিপোর্ট দেয়া হয়েছে, যার কারণে এ তদন্তের বিরুদ্ধে আদালতে না রাজি দিয়েছি। পুনরায় সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৭ নভেম্বর হিন্দু ধর্মরীতি অনুযায়ী বিবাহ হয় জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার চাপারকোনা গ্রামের শিবনাথ কাঞ্জি লালের ছেলে পলাশ কাঞ্জি লালের সাথে। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই যৌতুকের কারণে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। পরে তার পরিবার পলাশকে ৩ লাখ টাকা দেয়া হয়। পরে পূজার গর্ভবতি হলে হওয়ার পর সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অপারেশনের পরে বিষাক্ত কোন ইনজেকশন দিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছেন নিহতের বাবা। পরে পূজাকে অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল, ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। পরে পূজার শারিরীক অবস্থা আরো অবনতি হলে ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল খুলনা বাগেরহাটের চিতলমারি থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক পূজাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বাবা সত্যরঞ্জন গোস্বামী বাদী হয়ে পূজার স্বামী পলাশ কাঞ্জিলাল, পিতা শিবনাথ কাঞ্জিলালসহ পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করে। পরে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবিতে) প্রেরণ করা হয়। এই ঘটনায় ২০২৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক মো. আবু সিদ্দীক ঘটনার সততা পাওয়া যায়নি বলে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে পুনঃতদন্ত চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
নিহতের বাবা বলেন, আমার মেয়েকে কৌশলে হত্যা করা হয়েছে। মরার কয়েক দিন আগেও বলেছে বাবা ওরা আমাকে নির্যাতন করছে আমি সহ্য করতে পারছি না। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তার হত্যা রহস্য উদঘাটন করে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়ে বলেন,আমার মেয়েকে কৌশলে হত্যা করা হয়েছে। মামলা হওয়ার পরও আসামী টাঙ্গাইলেই সরকারি চাকরি করছে।