
ঘাটাইল প্রতিনিধি: ঘাটাইল ব্রাহ্মণশাসন কলেজের নৈশ প্রহরী ইউসুফ (৩৫) হত্যার মূল রহস্য উদ্ঘাটন করেছেন ঘাটাইল থানা পুলিশ। কলেজের সহকর্মীর হাতেই খুন হন নৈশ প্রহরী ইউসুফ।
আটককৃত তিনজনের মধ্যে দুই নৈশ প্রহরীই সরাসরি ইউসুফকে হত্যার সাথে জড়িত বলে মামলার তদন্ত কর্মর্কতা এসআই রাজু আহমেদ জানান। আটককৃত মোঃ সবুজ মিঞা ফরিদ ((৪৫) ও মোঃ জুয়েল (৩৫) গত ১৪ জুন টাঙ্গাইলের বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছেন ।
পুলিশ সূত্র জানায়, ভিকটিম ইউসুফ, আসামী মোঃ জুয়েল ও সবুজ মিঞা ওরফে ফরিদ খন্ডকালিন ঘাটাইল ব্রাহ্মণশাসন সরকারি কলেজে নৈশ প্রহরী হিসাবে কর্মরত ছিল। জুয়েলের বাড়ি উপজেলার গৌরিশ্বর গ্রামে। অপর আসামী মোঃ সবুজ মিঞা ফরিদের বাড়ি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার লাংঙ্গুলিয়া গ্রাম।
এই তিনজনের মধ্যে ইউসুফের বাড়ি কলেজের পূর্বপাশে থাকায় প্রতিনিয়ত সূর্য ডোবার আগেই ইউসুফ এসে বাতি জ্বালাতো এবং বাকী দুইজন অনেক দেরিতে কলেজে আগমন করতো। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকতো।
গত ৫ জুন কর্মরত তিন নৈশ প্রহরী রাতে যথারীতি ডিউটি পালন করে। ইউসুফের শরীর খারাপ থাকায় কলেজের মাঝের বারান্দায় মুশারী বেধে ঘুমিয়ে পড়ে। রাত আনুমানিক ২.৩০ মিনিটের সময় ইউসুফ ঘুমিয়ে পড়লে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ফরিদ ও জুয়েল ঘুমন্ত অবস্থায় ইউসুফের বুকের উপর উঠে শ্বাসরুদ্ধ এবং হাত-পা বেঁধে ফেলে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত হলে পরবর্তীতে কাথা দিয়ে পেছিয়ে লাশ কলেজের উত্তর-পূর্ব কোণে ডোবায় কচুরি পানা দিয়ে ঢেকে রাখে।
নিখোঁজের ৬ দিন পর লাশ পঁচে দুর্গন্ধ বের হলে স্থানীয় লোকজন ইউসুফের লাশ সনাক্ত করে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ মর্মান্তিক ঘটনায় পুলিশ সন্দেজনকভাবে তিনজনকে সাথে সাথে আটক করে থানায় নিয়ে যান। এ ব্যাপারে ইউসুফের স্ত্রী আল্পনা খাতুন বাদী হয়ে গত ১০ জুন ঘাটাইল থানায় আটককৃত তিনজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১১ জুন টাঙ্গাইল বিজ্ঞ আদালতে আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত ৩ দিন মঞ্জুর করেন।
আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তাদের মধ্যে মোঃ ফরিদ ও জুয়েলের তথ্য অনুযায়ী গত ১৩ জুন ইউসুফের ব্যবহৃত টর্চ লাইট, নোকিয়া মোবাইল ফোন, বাঁশি ও বল্লম মাটিতে পুতিয়ে রেখেছে বলে স্বীকার করেন । পরে পুলিশ তাদেরকে নিয়ে মাটিতে পুতিয়ে রাখা জিনিসপত্র কলেজের পাশ থেকে উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে আসামীদেরকে টাঙ্গাইল বিজ্ঞ আদালতে হাজির করা হলে সবুজ মিঞা ফরিদ ও জুয়েল চাঞ্চল্যকর নৈশ প্রহরী ইউসুফ হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজু আহমেদ জানান।
ঘাটাইল থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন জানান, মামলায় আটককৃত তিন আসামীর মধ্যে নৈশ প্রহরী হত্যার সাথে দুইজন সরাসরি জড়িত বলে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকার করেছে। মামলাটির তদন্ত চলছে।