নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদতলে কাদেরিয়া বাহিনীর অস্ত্র জমাদানের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কাদেরিয়া বাহিনীর অস্ত্র জমাদান উদযাপন কমিটির উদ্যোগে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
কাদেরিয়া বাহিনীর অস্ত্র জমাদান উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক এএম এনায়েত করিমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- সাবেক মন্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা কবি বুলবুল খান মাহবুব, কবি আল মুজাহিদী, আব্দুল কাদের সিদ্দিকীর সহধর্মির্ণী নাসরিন সিদ্দিকী, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক মোহন, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছালাম চাকলাদার, আবুল কালাম আজাদ বীরবিক্রম, হাবিবুর রহমান তালুকদার বীরপ্রতীক প্রমুখ।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেছেন, জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর আদর্শে পথ চলতে চাই। তিনি বলেন, বাংলার বাপ একটাই। বাংলার বাপ ২, ৩, ৪টা নয়, তিনি হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জাতীয় পার্টি, বিএনপিসহ সবাই জয় বাংলা বলবে। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর আমি এতিম হয়েছি। আমার বোনের কি ক্ষতি হয়েছে সেটা জানি না। তবে আমার, আমার ভাই ও পরিবারের অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে।
বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বলেন, গত ১৩-১৪ বছরে বাংলাদেশে অনেক লুটপাট হয়েছে। কিন্তু সরকারি উদ্যোগে টাঙ্গাইলে কোনো মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কেন্দ্র হয়নি। এছাড়াও নেই আমাদের অস্ত্র জমা দেওয়ারও স্মৃতিচিহ্ন। ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে যে অস্ত্র জমা দিয়েছিলাম, তা নতুন প্রজন্ম জানেই না। সেই স্মৃতি ধরে রাখতে স্মৃতিস্তম্ভ করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জামেল হকের প্রতি দাবি করেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, কাদের সিদ্দিকী ইতিহাসের গর্বিত সন্তান। মুক্তিযুদ্ধের মহামানব। তার বীরত্বগাথা ইতিহাসে বিরল। যুদ্ধ শেষে বিজয়ী হয়ে তিনি এক লাখ চার হাজার অস্ত্র বঙ্গবন্ধুর কাছে জমা দিয়েছিলেন। এটি একটি বিস্ময়। বাংলাদেশ সৃষ্টিতে কাদেরিয়া বাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে। জাতীয়ভাবে আমরা মনে করি এটি একটি ঐতিহাসিক দিন।
আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে বঙ্গবন্ধুর স্বার্থক আদর্শিক পুত্র অবহিত করে বলেন, আসুন আমরাও আপনাকে নিয়ে পথ চলতে চাই। ২০২৪ সালে যে নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনে এক বৃত্তে থাকবেন মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানীরা। স্বার্থক পিতার স্বার্থক উত্তরসূরি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে লড়ব।
মুক্তিযুদ্ধকালীন কাদেররিয়া বাহিনীর সাবেক প্রশাসক আবু মোহাম্মদ এনায়েত করিম জানান, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। তারপর ঢাকার বাইরে তিনি প্রথম সফর করেন টাঙ্গাইল। ওই বছর ২৪ জানুয়ারি টাঙ্গাইল শহরের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী তার বাহিনীর সব অস্ত্র বঙ্গবন্ধুর কাছে জমা দেন। বিভিন্ন প্রকারের এক লাখ চার হাজার অস্ত্র সেদিন বঙ্গবন্ধুর কাছে দেওয়া হয়েছিলো। সেই ঐতিহাসিক দিনটির ৫০বছর পূর্তি উপলক্ষে কাদেররিয়া বাহিনীর পক্ষ থেকে টাঙ্গাইল শহীদ মিনারে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।