ভূঞাপুর প্রতিনিধি: ভূঞাপুর উপজেলার লোকমান ফকির মহিলা ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ভর্তিতে কলেজের অধ্যক্ষ হাসান আলীর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, এ বছর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রার্থীদের কলেজে ভর্তি হতে ৩ হাজার ৭ শত টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। যা নির্ধারণ করছেন অধ্যক্ষ এককভাবে। এতে করে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অভিভাবকরা জানান, এই কলেজে নিতান্তই গরিব ঘরের মেয়েরা ভর্তি হতে আসে। আর তাদের ওপর অধ্যক্ষ চালান স্বেচ্ছাচারিতা।
ঘাটান্দী গ্রামের এক ছাত্রীর অভিভাবক তার মেয়েকে গত বুধবার ভর্তি করাতে এসে অধ্যক্ষের সাথে বাক বিতণ্ডায় জড়িয়ে যান। তিনি বলেন, যেখানে শিক্ষা বোর্ড ১৫ শত টাকা ভর্তি ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে, যেখানে তার উপরে এক টাকাও বেশি নেওয়া যাবে না বলে উল্লেখ রয়েছে, সেখানে কেন ৩৭ শত টাকা দিতে হবে? তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে নালিশ করবেন জানালে, অধ্যক্ষ উপজেলা শিক্ষা অফিসারকেও তোয়াক্কা করেন না বলে জানিয়ে দেন।
গোবিন্দাসী গ্রামের আরেক অভিভাবক সাথেও ঘটে একই ঘটনা। অধ্যক্ষ তাকে জানিয়ে দেন, পারলে মেয়েকে ভর্তি করান, না পারলে চলে যান। পরে তিনি মেয়ে ভর্তি না করিয়েই চলে যান। গত দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ফরম পূরণেও অধ্যক্ষ এইভাবে অতিরিক্ত ফি ধার্য করেছিলেন। কিন্তু ওই সময় ছাত্রীদের আন্দোলনের ফলে তিনি অতিরিক্ত ফি আদায় করতে ব্যর্থ হন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের একাধিক শিক্ষক বলেন, বর্তমান অধ্যক্ষ কলেজে আসার পর থেকেই এতো দুর্নীতি করে চলেছেন যে, তার কোনো বিচার না হওয়াতে, তিনি এখন আর কাউকেই তোয়াক্কা করছেন না।
এছাড়া, সম্প্রতি কলেজের চার লক্ষ টাকা মূল্যের বেশ কয়েকটি মেহগনি ও আকাশমনি গাছ বন বিভাগের অনুমতি এনে বিক্রি করে মাত্র চুয়াল্লিশ-পয়তাল্লিশ হাজার টাকা কলেজে জমা দিয়ে বাকি টাকা তিনি ও গভর্নিং বডির অন্য এক সদস্য আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা যায়। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্র থেকে প্রতি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের নকল করতে দেওয়ার শর্তে জনপ্রতি ৫’শ-১ হাজার টাকা চাঁদা তুলেছেন বলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
এ সকল অভিযোগের ব্যাপারে লোকমান ফকির মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হাসান আলীর সঙ্গে কথা বলার জন্য মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।
ছাত্রী ভর্তির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ফি আদায়ের ব্যাপরে কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি মশিউজ্জামান রোমেলকে অবহিত করা হলে তিনি জানান, অধ্যক্ষ কারো কথা মানছেন না, তিনি তার কাজে অপ্রতিরোধ্য হয়ে গেছেন। আমরা আগামী মিটিংয়ে তার বিরুদ্ধের অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।