আব্দুল লতিফ, ঘাটাইল: ঘাটাইলে নীরবে- নিভৃতে মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে কাজ করেন ডাঃ এম. এ. সাত্তার। আত্মপ্রচার নয়, আত্মতৃপ্তিই যাঁর মূল উদ্দেশ্য। মানবতার কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দেয়া তেমনই একজন মানুষ হচ্ছেন ডাঃ মোঃ আব্দুস সাত্তার।
কখনও মাদ্রাসার এতিমদের পাশে আবার কখনও বা কোন হত দরিদ্র মানুষের ঘরে দূয়ারে। প্রতিদিন কোন না কোন মানব সেবা তাঁর প্রতিনিয়ত অভ্যাস। বাঙালি জাতি যেসব কীর্তিমান সন্তানকে নিয়ে গর্ব করতে পারে, ডাঃ এম. এ.সাত্তার তাঁদেরই একজন। জীবনের প্রতিটি কাজে অসাধারণ অবদান রেখে কর্মগুণে খুব সহজেই আজ তিনি সারাদেশের মানুষের প্রিয়জন হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। এলাকায় অসহায়, গরিব, দুখী মানুষের জন্য কাজ করার নেশা তাঁর ছোটবেলাতে গড়ে ওঠে। রাজনীতিতে সম্পৃক্ত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কোন পদে না থেকেও যে, জনসেবায় নজির স্থাপন করা যায় ডাঃ এম. এ. সাত্তার তার এক উজ্জ্বল উদাহরণ।
নিজ এলাকায় অসহায়, গরিব, দুখী মানুষের জন্য বছরের পর বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। কেবল আন্তরিক ও প্রাণবন্ত ব্যবহার দিয়েই নয়, অর্থ-মেধা-শ্রম দিয়েও মানুষের সুখ-দুঃখের সাথী হয়েছেন; সকলের মনের মনিকোঠায় জায়গা করে নিয়েছেন। এলাকার উন্নয়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। অসাম্প্রদায়িক চেতনার ব্যক্তিত্ব ডাঃ এম. এ. সাত্তার সকল ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায় ও গোষ্ঠীর মানুষের কাছে সমানভাবে জনপ্রিয় ও সমাদৃত। মানব সেবাই যেন তাঁর নেশা ও পেশা। তিনি শতশত রোগীকে সেবা দিয়ে নজির স্থাপন করেছেন। এছাড়া ফেসবুক, ইউটিউব ও দূরদর্শনের মাধ্যমে লক্ষ কোটি মানুষের কাছে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছেও দিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, ডাঃ এম. এ. সাত্তার ১৯৭৩ সালের ১২ ডিসেম্বর ঘাটাইল উপজেলার কাইতকাই গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকাল থেকেই তিনি অনেক মেধাবী, ভদ্র ও বিনয়ী স্বভাবের ছিলেন। শিক্ষাজীবনে তিনি ঘাটাইল গণ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জুনিয়র বৃত্তি লাভ ও এসএসসিতে স্টার মার্কসসহ পাশ করেন। পরবর্তীতে সরকারী বিজ্ঞান কলেজ, ঢাকা থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ সরকারী ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্নাতক (বিইউএমএস) ডিগ্রী লাভ এবং নর্দান ইউনিভার্সিটি থেকে পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন আল্ট্রাসাউন্ড মেডিসিন (পিজিডি) এ সনোলজিস্ট হিসাবে পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি স্বনামধন্য একজন ইউনানী চিকিৎসক হিসেবে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী সরকারী হাসপাতাল, উত্তরা, ঢাকার ইউনানী মেডিকেল অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন। বিগত তিন বছর পূর্বে তিনি সরকারী চাকুরী হইতে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি গ্রহন করে ইউনিড্রাগ ইউনানী ল্যাবরেটরীজ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে অত্যন্ত সুনামের সহিত দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
ডাঃ এম. এ. সাত্তার সংসার জীবনে খুবই সাদা-সিদে এবং ধর্ম-পরায়ন মানুষ। তাঁর সহধর্মিনী একজন আদর্শ ও শান্ত স্বভাবের গৃহিণী। স্ত্রীর উৎসাহ -উদ্দীপনায় তাঁর লক্ষ্য ও আকাঙ্খায় এগিয়ে চলেছেন। ডাঃ এম. এ. সাত্তার দম্পত্তি ইতিমধ্যে পবিত্র হজ্ব পালন করেছেন। তাঁদের একমাত্র পুত্র সন্তান দেশের স্বনামধন্য “বাংলাদেশ হোপ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ, উত্তরা, ঢাকা” থেকে ইংলিশ মিডিয়ামে “এ লেভেল” পাশ করে চলতি বছরের জানুয়ারী মাসের শেষের দিকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের জন্য অস্ট্রেলিয়ার ম্যাক কুয়েরী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের জন্য গমন করবেন এবং তাঁর একমাত্র কন্যা “উত্তরা উইমেন্স মেডিকেল কলেজ” ঢাকা থেকে এমবিবিএস সফলতার সহিত শেষ করে আইসিডিডিআরবি-তে চিকিৎসক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে বিবাহোত্তর স্বামীসহ তিনিও চিকিৎসা শাস্ত্রের উপর উচ্চশিক্ষা অর্জনে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অবস্থান করছেন।
ডাঃ এম. এ. সাত্তার -এর লেখা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর লেখা বই পাঠক সমাজে ও চিকিৎসকদের মাঝে বেশ সমাদৃত । তিনি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইউনানী প্রফেশনাল সেমিনারে অংশগ্রহণ এবং গবেষণা প্রবন্ধ পাঠ করেন। তিনি অসহায়, দুস্হ- অসুস্থ মানুষের চিকিৎসার উদ্দেশে দেশের বিভিন্ন স্থানে ফি হেলথ ক্যাম্প করেন। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশনে প্রশ্ন-উত্তর পর্বেও অনেক সময় অংশগ্রহণ করে থাকেন। তিনি বাংলাদেশ ইউনানী ওষুধ শিল্প সমিতির সহসভাপতি এবং হারবাল প্রোডাক্ট, কসমেটিক অ্যান্ড ডায়েটারি সাপ্লিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর একজন সম্মানিত নির্বাচিত সদস্য। জাতীয়তাবাদী আদর্শের সংগঠন ইউনানী-আয়ুর্বেদিক গ্রাজুয়েট ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আগড্যাব) এর সম্মানিত সহ সভাপতি।
দীর্ঘদিন ধরে জনসেবায় আত্মনিয়োগ করা ডাঃ এম. এ. সাত্তারের কর্মকান্ডে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তাঁর এলাকার জনসাধারণ। ব্যক্তিগতভাবে পরোপকারী চিকিৎসক হিসেবে যে মানবিক নজির স্থাপন করেছেন, তা এলাকার মানুষের হৃদয়ের মণি কোঠায় ভাস্বর। তাছাড়া তিনি এলাকার জনসাধারন, অসহায়, নিঃস্বদের কাছ থেকে কখনো চিকিৎসা ফি নেন না।
ডাঃ এম. এ. সাত্তার বলেন, ‘এলাকার সবার ভালোবাসায়, মা-বাবার অসীম দোয়ায় আজ আমি একজন চিকিৎসক, জনগনের সেবক ও একজন শিল্প উদ্দ্যোক্তা। মানুষের বিপদ-আপদে দুর্দিনে পাশে থাকা আমার নৈতিক দায়িত্ব-কর্তব্য। কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তাঁর নেতৃত্বে এবং সুদক্ষ, উচ্চশিক্ষিত, তরুণ, বেকার এবং মেধাবী বিপণন কর্মী ও কর্মকর্তাদের নিয়োগ করায় তাদের নিরলস প্রচেষ্টায় বর্তমানে ইউনিড্রাগ ইউনানী ল্যাবরেটরীজ সর্বজন গ্রহনযোগ্য ও প্রশংসিত।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন “ঔষধ শিল্প ও আধুনিকায়ণ -এর মাধ্যমে দেশ ও জাতির স্বাস্থ্যসেবায় ঔষধ শিল্প বিরামহীনভাবে পরীক্ষা- নীরিক্ষা ও গবেষণা করে মান সম্মত ঔষধ উৎপাদন করে দেশের চাহিদা মিটিয়েও বিদেশে ঔষধ রপ্তানি করে দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।”