বিএনপির প্রার্থী আহমেদ আযমের মোবাইল অডিও ফাঁস: মুক্তিযোদ্ধা খালেকের থানায় জিডি

অপরাধ ভূঞাপুর রাজনীতি সখিপুর

ভূঞাপুর প্রতিনিধি: টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে বিএনপি প্রার্থী ও দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খানের একটি অডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে তাঁর বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক খালেক মণ্ডলকে হুমকি এবং আপত্তিকর ভাষায় কথা বলার অভিযোগ উঠেছে। তবে বিএনপি নেতা আহমেদ আযম খান ওই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, অডিওটি এডিট করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

 

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক মণ্ডলের বাড়ি ভূঞাপুর উপজেলায়। তিনি ভূঞাপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও পৌরসভার সাবেক মেয়র। বর্তমানে তিনি টাঙ্গাইল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক মণ্ডল জানান, গত বুধবার বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে আহমেদ আযম খান তাঁকে ফোন করেন। তাদের কথোপকথন হয় ৩ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড। সেই কথোপকথনের অডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। আহমেদ আযম খান ফোন করে গালাগাল করেছেন। পিঠের চামড়া থাকবে না বলে হুমকি দিয়েছেন। তিনি যেভাবে কথা বলেছেন, তার হুবহু কলরেকর্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

 

ওই অডিওতে বিএনপি প্রার্থী আহমেদ আযম খানকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনি আমার নির্বাচনী এলাকায় কমিটি করবেন, আর আমাকে জিজ্ঞেস করবেন না? আপনার বাড়ি কোথায়? আপনার সিএস আরএস কী। আপনি আমার নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্ত করবেন, এটা করতে দেওয়া হবে না। খামোশ। আপনার পিঠের চামড়া থাকবে না। কীভাবে আপনি বাসাইল আসেন, দেখব। ফাজিলের বাচ্চা। তিনি আরও বলেন, আপনি কি একা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন? আর কেউ করে নাই? ফাইজলামি পাইছেন। মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট পকেটে নিয়ে আইসেন। মুক্তিযোদ্ধার সভাপতি হয়ে দুর্নীতি করছেন। টাকার লোভে পাইছে। টাকার লোভ আপনাকে খাইয়ে দেব, আপনার পিঠের চামড়া থাকবে না, একেবারে খাইয়ে দেব। ফাজিলের বাচ্চা, তোর সঙ্গে আবার কীসের শালীনতা রে, আমি তোকে দেখব।’

হুমকির অভিযোগ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা আহমেদ আযম খান বলেন, ‘আমি তাঁর সঙ্গে কথা বলেছি, তবে কোনো হুমকি দিইনি। অডিওতে এআই ব্যবহার করে অন্য রকম করা হয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক মণ্ডল বলেন, ‘ওই অডিও স্পষ্ট। এখানে কোনো এআই ব্যবহার করা হয়নি।’ তিনি টাঙ্গাইল সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড থেকে তাঁকে মামলা করতে বলা হয়েছে। তিনি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এদিকে, খালেক মণ্ডলের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভূঞাপুর উপজেলা কমান্ডের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভূঞাপুর উপজেলা কমান্ডের কমান্ডার চাঁদ মিয়া। বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ টাঙ্গাইল জেলা কমান্ডের সদস্যসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ হাবিব, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কমান্ডের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান, টাঙ্গাইল জেলা বার সমিতির সাবেক সভাপতি আবু তালেব মিয়া, ভূঞাপুর বাজার বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি শাহজাহান কবির লিটন, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি হাবিবুর রহমান তরফদার ভুট্টো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *