মির্জাপুরে পাইপ ফেটে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ: দুই হাজার গ্রাহকের ভোগান্তি

দুর্ঘটনা প্রতিষ্ঠান মির্জাপুর

মির্জাপুর প্রতিনিধি: মির্জাপুরে মডেল মসজিদের পাইলিংয়ের সময় তিতাস গ্যাসের প্রধান সঞ্চালন লাইনের পাইপ ফেটে দু’দিন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে কুমুদিনী হাসপাতাল, ভারতেশ্বরী হোমসসহ প্রায় দুই হাজার আবাসিক গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। মির্জাপুরের গোড়াই শিল্পাঞ্চলের অন্তত ১০টি কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর বিকেল পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন লাইন এখনো মেরামত হয়নি।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা যায়, শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে মির্জাপুর মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজের পাইলিং করার সময় হঠাৎ গ্যাসের পাইপে খননযন্ত্রের আঘাত লাগে। এতে পাইপ ফেটে বিকট আওয়াজ হয়ে গ্যাস বের হতে থাকে। খবর পেয়ে তিতাস কর্তৃপক্ষ শুক্রবার রাত ৮টার দিকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। পাশাপাশি লাইন মেরামতের জন্য তিতাসের লোকজন ঘটনাস্থলে আসেন। তবে রবিবার বিকেল পর্যন্ত সেটি মেরামত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয়রা জানান, গ্যাস-সংযোগ বন্ধ থাকায় মির্জাপুরের সোহাগপুর থেকে নাটিয়াপাড়া পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকার প্রায় দুই হাজার আবাসিক গ্রাহককে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তারা মাটি ও সিলিন্ডারের চুলায় রান্না করছেন। এ ছাড়া মির্জাপুরের গোড়াই শিল্পাঞ্চলের অন্তত ১০টি কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

বাইমহাটী পশ্চিমপাড়া এলাকার আফজার হোসেন বলেন, পাইলিং কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে যে রাস্তার পাশ দিয়ে গ্যাসের প্রধান সঞ্চালন লাইন আছে। তারপরও তারা ভেকু মেশিন দিয়ে তা লিকেজ করেছেন। তারা খামখেয়ালিপনা করে এমনটি করেছেন। তাদের কারণে সহস্রাধিক মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

কুমুদিনী হাসপাতালের উপ-পরিচালক অনিমেষ ভৌমিক বলেন, গ্যাস না থাকায় কুমুদিনী হাসপাতাল, ভারতেশ্বরী হোমসসহ কমপ্লেক্সে অবস্থিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অন্তত পাঁচ হাজার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকলে গ্যাস জেনারেটরের মাধ্যমে হাসপাতালের রোগীদের বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয়। যা তেলের জেনারেটরে সম্ভব হয় না। গ্যাসের সংযোগ বন্ধের পর থেকে কয়েকবার বিদ্যুৎ চলে যাওয়াতে দুর্ভোগ আরও বাড়ছে।

তিতাস টাঙ্গাইলের সহকারী প্রকৌশলী রমজান আলী বলেন, ফেটে যাওয়া লোহার পাইপটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন। পাইপটি অন্তত ৩০ ফুট নিচে অবস্থিত। মসজিদের পাইলিং করার সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন পাইপটি ফাটিয়ে ফেলেছেন। ওই স্থানে গ্যাস লাইনের পাইপ রয়েছে বিষয়টি সবাই জানানোর পরও তিতাস অফিসে কাজের বিষয়ে লিখিত বা মৌখিকভাবে জানানো হয়নি। পাইপ ফেটে যাওয়ার পর আমাদের অন্তত দুই হাজার আবাসিক ও ১০টি কারখানার গ্রাহককে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

গণপূর্ত বিভাগ টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী শম্ভু রাম পাল বলেন, মডেল মসজিদ নির্মাণের স্থানে গ্যাসের পাইপ লাইন আছে সেটি তাদের জানা ছিল না। বিষয়টি ভুল হয়ে গেছে। দ্রুত যাতে পাইপ মেরামত করা যায় এজন্য তিনি তিতাসের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবিএম আরিফুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে তিতাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে লাইন মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে পাইলিংয়ের কাজ করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *