টাঙ্গাইলে কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষা জালিয়াতির অভিযোগে ৬জন গ্রেপ্তার

অপরাধ আইন আদালত টাঙ্গাইল সদর দুর্নীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি চক্রের ছয় সদস্য গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইল সদর ও রংপুরের কোতায়ালী থানা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

 

তাদের কাছ থেকে ৯টি বিভিন্ন ব্যাংকের স্বাক্ষরিত ফাঁকা চেক, ৬০টি নকল প্রবেশ পত্র, ৭০টি স্বাক্ষরিত ফাঁকা রাজস্ব স্টাম্প ও একটি সিপিইউসহ বিভিন্ন সরাঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন, ধনবাড়ির শ্রীহরিপুর গ্রামের ছবুর উদ্দিনের ছেলে এস এম আয়াত (১৯), সদর উপজেলার বাগবাড়ীর গ্রামের জাফর আলীর ছেলে মো. জিহাদ (১৯), কালিকৈটাল গ্রামের জুব্বার সিকদারের ছেলে মো. আব্দুল্লাহ (১৯), রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার গন্ধবপুর গ্রামের আবু বক্করের ছেলে মেহেদী হাসান (২৫), দোড়াকান্দর গ্রামের দ্বীপক চন্দ্রের ছেলে হিমান্ত চন্দ্র রায় আপন (১৯) ও বড়আমবাড়ী গ্রামের ওবায়দুল ইসলামের ছেলে তুহিন মিয়া (১৯)।

দুপুরে জেলা পুলিশের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার সাইফুল সানতু সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ২০ নভেম্বর টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ লাইন্সে বাংলাদেশ পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পরীক্ষার মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থী এস এম আয়াত, মো. জিহাদ ও মো. আব্দুল্লাহর লিখিত পরীক্ষায় খাতায় প্রাপ্ত নম্বর এবং তার মৌখিক পরীক্ষায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তরের মধ্যে অসঙ্গতি ও তারতম্য পরিলক্ষিত হওয়ায় নিয়োগ বোর্ড তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

এক পর্যায়ের প্রার্থীগণ স্বীকার করে যে, গত ১৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায় নিজেরা অংশগ্রহণ না করে অসৎপন্থা অবলম্বন করে অসাধুভাবে অন্য ব্যক্তিদের দিয়ে উক্ত লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়েছিলেন। পরে পুলিশ বাদি হয়ে ২০ নভেম্বর সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। তাদের গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইদিন সদর থানায় রিমান্ডে নেয়া হয়। গত ২৫ নভেম্বর মামলাটি আদালত থেকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি দক্ষিণ) হস্তান্তর করা হয়। পরে ডিবি পুলিশের তাদের আরও দুইদিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাবাদ করে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে মেহেদী হাসান, হিমান্ত চন্দ্র রায় আপন ও বড়আমবাড়ী গ্রামের ওবায়দুল ইসলামের ছেলে তুহিন মিয়াকে বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করে তাদের আদালতে পাঠানো হবে।

পুলিশ সুপার আরো জানান, ধৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাংলাদেশ পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পরীক্ষায়সহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় দেশের বিভিন্ন জেলায় চক্রবদ্ধভাবে জালিয়াতির সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে নিজেদের দোষ স্বীকার করে। লিয়াতির’ জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতার করার লক্ষে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

তিনি আরও জানান, আসামীদের হেফাজত হতে বিভিন্ন প্রার্থীর নকল প্রবেশ পত্র ৬০টি, ছবি ৩২টি, বিভিন্ন নম্বর সম্বলিত এবং স্বাক্ষরিত ফাঁকা রাজস্ব স্ট্যাম্প ৭০টি, বিভিন্ন ব্যাংকের স্বাক্ষরিত ফাঁকা চেক ৯টি, মোবাইল ফোন ৭টি, কম্পিউটার পিসি ১টি, হিসাবের ডাইরী ১টি, স্ট্যাম্প প্যাড ১টি, সিল ২টিসহ ব্যাগ ২টি এবং ৩টি কভার ফাইল উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *