টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র মুক্তির দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর

অপরাধ আইন আদালত গোপালপুর টাঙ্গাইল সদর রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তিকে গোপালপুর উপজেলায় প্রায় ১৪ বছর আগে একটি বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। সম্প্রতি ওই ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।

টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র মুক্তি টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খানের ছেলে ও একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার ভাই।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ১ নভেম্বর গোপালপুর উপজেলার ভুটিয়া গ্রামের আব্দুল মজিদের বাড়িতে ঢুকে এক দল সন্ত্রাসী দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেওয়ায় তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে সন্ত্রাসীরা। প্রায় ১৪ বছর পর গত ২২ অক্টোবর আব্দুল মজিদ বাদি হয়ে গোপালপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় গোপালপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র রকিবুল হক ছানাসহ ২৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। সেখানে মুক্তির নাম নেই। তবে অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে মুক্তিকে টাঙ্গাইল অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। পরে গোলাপুর থানায় আব্দুল মজিদের দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্বাস আলী মুক্তিকে গ্রেপ্তার দেখানোর এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে পৃথক দুটি আবেদন করেন। শুনানি শেষে ওই আদালতের বিচারক অতিরিক্তি চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল মোহসীন মুক্তিকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখান এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় হাজিরা দিতে টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এসেছিলেন মুক্তি। হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে বিকেলে টাঙ্গাইল আদালত এলাকা থেকে তাকে আটক করে টাঙ্গাইল সদর থানা পুলিশ। পরে শুক্রবার বিকেলে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরুল হকের উপর হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। রোববার রিমান্ড আবেদন ও জামিন আবেদনের শুনানি হয়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পশুপতি বিশ্বাস রিমান্ড ও জামিন উভয় আবেদন নামঞ্জুর করে মুক্তিকে কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন।

আদালত সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় মুক্তির সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি বের হয়ে আসে। তারপর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। দীর্ঘদিন পর ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠায়। পরে ২০২২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি জামিন পেলেও পরে সেই জামিন বাতিল করেন আদালত । এরপর ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে ২২ নভেম্বর কারা মুক্ত হন তিনি। পরে আদালত তার জামিন বাতিল করলে পরদিনই আদালতে আত্মসমর্পণ করে কারাগারে যান। গত ২৮ আগস্ট তিনি আবার অস্থায়ী জামিন পান। গত ২২ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে স্থায়ী জামিন লাভ করেন। পরে তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।গত বৃহস্পতিবার মামলার ধার্য তারিখে তিনি অ্যাম্বুলেন্স যোগে আদালতে আসেন। ফেরার পথে আদালত এলাকা থেকে নতুন মামলায় আবার গ্রেপ্তার হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *