নিজস্ব প্রতিবেদক: ধর্ষণ মামলায় টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। একইসঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীর গর্ভে জন্ম নেওয়া নবজাতকের ডিএনএ টেস্টের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত । আগামী ২১ আগস্ট ডিএনএ টেস্টের রেজাল্ট আপিল বিভাগে দাখিল করতে বলা হয়েছে । ওই দিন পরবর্তী শুনানি হবে ।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন । আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। আসামির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গতকাল বিচারপতি শেখ জাকির হোসেনের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ বড় মনিরকে জামিন দেন। পরে জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ১৫ মে ধর্ষণ মামলায় টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন আদালত। টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মাহমুদুল মহসীন এই আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, গোলাম কিবরিয়া বড় মনির টাঙ্গাইল-২ ( গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের বড় ভাই এবং জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব। গত ৫ এপ্রিল রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরের বিরুদ্ধে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় ওই কিশোরী ধর্ষণের কারণে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরের স্ত্রী নিগার আফতাবকেও আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ভাইয়ের সঙ্গে ওই কিশোরীর পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ ছিল। বিষয়টি সমাধানের জন্য বড় মনিরের সঙ্গে কিশোরী যোগাযোগ করলে গত ১৭ ডিসেম্বর শহরের আদালতপাড়ার ফ্ল্যাটে যেতে বলেন তিনি। সেখানে গেলে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন মনির। এমনকি ধর্ষণের ছবিও তুলে রাখেন তিনি। আর ওই ছবি দেখিয়ে পরে আরও বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করা হয় কিশোরীকে।
এদিকে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তাঁকে গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে বলেন মনির । কিশোরী রাজি না হলে গত ২৯ মার্চ রাতে তাকে তুলে নিয়ে আবারও ধর্ষণ ও মারধর করা হয় । আর তাতে সহযোগিতা করেন মনিরের স্ত্রী। এতে কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে রাত ৩টার দিকে তাকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। পরে ওই কিশোরী মনির ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
ধর্ষণ মামলায় গত ১৮ এপ্রিল হাজির হয়ে বড় মনির আবেদন করলে হাইকোর্ট তাকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলে ৩০ এপ্রিল চেম্বার আদালত জামিন স্থগিত করে দুই সপ্তাহের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী গত ১৫ মে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে অন্তঃসত্ত্বার প্রমাণ পেয়েছে মেডিকেল বোর্ড । এছাড়া ওই কিশোরী ৬ এপ্রিল দুপুরে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে । গত ৩০ জুন ওই কিশোরী সন্তান জন্ম দেন ।