নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলার ১২জন শিক্ষক জাল সনদ দিয়ে চাকরি করায় চাকরি হারাচ্ছেন। একই সঙ্গে তাঁদের সরকারের কাছ থেকে বেতন-ভাতাসহ গৃহীত সব টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরতও দিতে হবে।
জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সারা দেশের ৬৭৮ জন শিক্ষকের মধ্যে টাঙ্গাইলের ১২ শিক্ষকের জন্যও একই সুপারিশ করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার সুপারিশ করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২০১৪-১৭ সালে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম নিরীক্ষা করা হয়। নিরীক্ষায় শিক্ষকদের জাল সনদের বিষয়টি প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব মো. সেলিম সিকদার গত ১৮ মে তারিখে স্বাক্ষরিত তালিকা থেকে জানা গেছে, জেলার ১২জন শিক্ষক জাল সনদ দেওয়ার কারণে চাকরি হারাচ্ছেন। তাঁরা হলেন- কালিহাতী উপজেলার কালিহাতী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) মো. ইদ্রিস আলী, শামসুল হক কলেজের দর্শন বিভাগের প্রভাষক মুহাম্মদ মসলিম উদ্দিন, নাগরপুর যদুনাথ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (গণিত ও বিজ্ঞান) মো. জাহাঙ্গীর আলম, আনোয়ারা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) মো. মাসুদ রানা, ঘাটাইলের সন্ধানপুর গণ-উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) মো. মমিনুল ইসলাম, মধুপুরের কালামাঝি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) ইমদাদুল হক, ধনবাড়ীর কদমতলী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) মোছাম্মৎ নুরুন্নাহার, গোপালপুরের নলীন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) মো. মহসিনুজ্জামান খান, ভূঞাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কৃষি) আমিনা আক্তার, মো. রকিবুল হোসেন, মো. তামামুল ইসলাম ও সখিপুরের রাজাবাড়ী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ইসলাম ধর্ম) ফরিদা ইয়াসমিন।
মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ অনুসারে শিক্ষকদের মধ্যে ইদ্রিস আলীর কাছ থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৫, মুহাম্মদ মসলিম উদ্দিনের কাছ থেকে ৬ লাখ ২৫ হাজার ৬২৫, জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে ৩ লাখ ২৫ হাজার ১৪০, মোছাম্মৎ নুরুন্নাহারের কাছ থেকে ৫ লাখ ১৯ হাজার ৬১০, মো. মহসিনুজ্জামান খানের কাছ থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৬৫০, ফরিদা ইয়াসমিনের কাছ থেকে ৭ লাখ ৯৬ হাজার ও মো. মাসুদ রানার কাছ থেকে ৫ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ টাকা আদায়ের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া বাকি পাঁচজনের কাছ থেকে আদায়যোগ্য শূন্য টাকা দেখানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বলেন, নিরীক্ষা সময় পর্যন্ত হিসাব ধরা হয়েছে বিধায় শূন্য টাকা উল্লেখ হয়েছে। পরে এমপিওভুক্ত হয়ে গৃহীত টাকাও তাঁদের ফেরত দেওয়া লাগতে পারে।
টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এখনো মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো কোনো কাগজ আমরা হাতে পাইনি। তিরি আরো বলেন, এনটিআরসিএর জাল সনদ দিয়ে চাকরি করায় ১২ শিক্ষকের বিরুদ্ধে অধিদপ্তর পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানতে পেরেছি।