ঘাটাইল প্রতিনিধি: ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আবু সাঈদ রুবেলের উপর শুক্রবার সকালে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত আবু সাঈদ রুবেল ঘাটাইল জিবিজি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি)।
আবু সাঈদ রুবেল ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবুর অনুসারী। আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে ঘাটাইল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক দুই নেতা–কর্মীর ওপর হামলার ঘটনার মামলায় এলাকা ছেড়েছিলেন। উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে গত বৃহস্পতিবার এলাকায় ফেরেন তিনি। তার উপর হামলার জন্য শহিদুল ইসলাম লেবু টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার অনুসারীদের দায়ী করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, গত ২৫ এপ্রিল আমানুরের অনুসারীদের সঙ্গে শহিদুলের অনুসারীদের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আমানুরের অনুসারী পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হায়দার তালুকদার এবং সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী মো. জুনায়েদ আহত হন। গুরুতর আহত জুনায়েদ সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় জুনায়েদের ভাই জাহিদ হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় আবু সাঈদ রুবেল, তার ভাইসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দায়েরের পর আবু সাঈদ এলাকা ছাড়েন। গত বুধবার হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন পেয়ে তিনিসহ মামলার ৯ আসামি পরদিন বৃহস্পতিবার ঘাটাইলে ফিরে আসেন।
আবু সাঈদের স্বজনেরা জানান, আজ সকাল আটটার দিকে ঘাটাইল জিবিজি কলেজ গেট এলাকায় যান আবু সাঈদ। এ সময় দেশীয় অস্ত্রধারী এক দল যুবক তাঁর ওপর হামলা চালান। এ সময় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর সাঈদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে সাঈদের স্বজনেরা জানিয়েছেন। তবে ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম বলেছেন, আবু সাঈদের ওপর হামলার ঘটনা তারা জেনেছেন। কিন্তু এ ঘটনায় বিকেল পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি।
ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেকমত সিকদার জানান, আবু সাঈদের ওপর হামলাকারীরা সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খানের অনুসারী। এর আগে ২০১৬ সালের ৯ নভেম্বর আবু সাঈদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়। সে হামলায় সাঈদ হাতের আঙুল হারান, তিনি পঙ্গু হয়ে যান। ওই মামলায় গ্রেপ্তারকৃত একাধিক আসামি আদালতে জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, আমানুরের নির্দেশে সাঈদের ওপর হামলা করেছিলেন তারা।
এ বিষয়ে সাবেক সাংসদ আমানুর রহমান খান রানার অংশের নেতা আনেহলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তালুকদার মো. শাহজাহান বলেন, যে কোনো ঘটনা ঘটলেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান ও তার অনুসারীদের দায়ী করা হয়। এর মধ্য দিয়ে শহিদুল ইসলাম রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চান। সাঈদের ওপর হামলার সঙ্গে তাদের কেউ জড়িত নয় বলে তিনি দাবি করেন।