টাঙ্গাইলে সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা

অপরাধ টাঙ্গাইল সদর দুর্ঘটনা ফিচার

সুলতান কবির: টাঙ্গাইলের আদালত পাড়ার প্রভাবশালী সুদের ব্যবসায়ী প্রিন্সের ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে এক ব্যবসায়ী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।

সোমবার, ৩ জুন আনুমানিক সকাল ১০টায় টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৪ নং ওয়ার্ড আদালত পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। প্রয়াত সুধির কুমার দাসের ছোট ছেলে মুকুল কুমার দাস (৪৮) ফাঁকা বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মুকুল একজন শান্ত স্বভাবের মানুষ। দীর্ঘদিন যাবত তিনি তার বাড়ীর পাশে একটি মনোহারী দোকান করতেন। স্থানীয় সুদের ব্যবসায়ী প্রিন্সের কাছ থেকে তিনি বছর খানেক আগে ১ লক্ষ টাকা সুদ নেয়। নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক সপ্তাহে তিনি টাকা পরিশোধ করতে থাকলেও ব্যবসায়িক অবস্থা কিছুটা খারাপ হওয়ায় মুকুল সুদের টাকা দিতে একটু সময় চান। মুকুল তার শ্বশুর বাড়ী বেড়াতে গেলে, সেখানেও সুদের কারবারি প্রিন্স তার দলবল নিয়ে টাকার জন্য অকথ্য গালিগালাজ করে ও হুমকি প্রদান করেন বলে অভিযোগ করেন নিহত মুকুল দাসের স্ত্রী।

এ বিষয়ে মুকুল দাসের বড় ভাই, টাঙ্গাইল জজ কোর্টের আইনজীবী সহকারী, স্বপন কুমার দাস বলেন, প্রিন্স আমার ভাইকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে। বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান ও নানামুখী চাপের কারনেই আমার ভাই আত্মহত্যা করেছে।

এ বিষয়ে মুকুল দাসের পিশাতো বোন রত্না সেন বলেন, প্রিন্স একজন সন্ত্রাসী ও আদালত পাড়ার নামকরা সুদের কারবারি। তার সুধের টাকা পরিশোধ করতে দেরি হলেই প্রতিটি পরিবারের উপর নেমে আসে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, প্রিন্স প্রতিদিন আমার ভাইয়ের দোকান থেকে জোর করে এক হাজার টাকা নিতো। আমার ভাইয়ের মতো যেন আর কেউ আত্মহত্যার ঘৃণিত কাজ না করেন সে বিষয়টি আপনাদের লেখনীর মাধ্যমে দয়া করে তুলে ধরবেন।

আত্মহত্যার বিষয়ে অভিযুক্ত প্রিন্সের কাছে জানতে চাইলে, মুঠোফোনে প্রতিবেদককে জানান, ২ জুন আমি তার শ্বশুড় বাড়ীতে গিয়ে টাকা দেওয়ার কথা চাপ দেই বিষয়টি সত্যি। তবে একটি বিষয় আপনারা কেন বুঝেন না আমি তার কাছে টাকা পাই, তো চাইতে পারব না? এই বলে উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দেন প্রতিবেদককে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানার (ওসি তদন্ত) সাদিকুর রহমান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *