নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল শহরের শহিদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে একাধিক শতবর্ষী গাছ কেটে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে টাঙ্গাইল পৌরসভা। এর প্রতিবাদে টাঙ্গাইলের গণমাধ্যম কর্মীসহ সচেতন সমাজের প্রতিবাদ ও আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।
পৌরসভার গাছ কাটার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সোমবার (২২ এপ্রিল) মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও সবুজ পৃথিবী নামে দুটি সংগঠন।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, টাঙ্গাইল শহিদ স্মৃতি পৌর উদ্যানের এইসব শতবর্ষী গাছ রক্ষায় আমাদের আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে আমরা গাছগুলো পাহারা দেব। কোনো অবস্থাতেই এই শতবর্ষী শিল কড়ই গাছ কাটা চলবে না। গাছগুলো রক্ষায় টাঙ্গাইলে সক্রিয় পরিবেশবাদী সংগঠন ও সচেতন নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।
বাপা টাঙ্গাইল শাখার সভাপতি ও মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এএসএম সাইফুল্লাহ’র সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, ইব্রাহীম খা সরকারী কলেজের সহযোগী অধ্যাপক অনিক রহমান বুলবুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা রঘুনাথ বসাক, বাপা টাঙ্গাইল শাখার সহ-সভাপতি আজাহারুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জাতীয় কমিটির সদস্য ও টাঙ্গাইল শাখার সাধারণ সম্পাদক, সবুজ পৃথিবীর প্রতিষ্ঠাতা শহীদ মাহমুদ, যুগ্ম-সম্পাদক মাসুদ রানা, মোঃ এরফানুজ্জামান রুনু, সাংগঠনিক সম্পাদক নুর আলম সিদ্দিকী, আওয়াল মাহমুদ, ডাঃ আজিজুল হক প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা, গাছ প্রকৃতি ও জলাশয়কে রক্ষা করেই নগর পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন এবং প্রকৃতির অর্থনৈতিক ভ্যালু নির্ধারণেরও দাবি জানান।
উল্লেখ্য,শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে টাঙ্গাইল পৌরসভা কর্তৃপক্ষ হঠাৎ টাঙ্গাইল শহরের ফুসফুস খ্যাত শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানের ৬টি প্রাচীন রেইন টি গাছ কাটতে শুরু করে। কোন রকম টেন্ডার প্রক্রিয়া ছাড়াই মেয়রের একক সিদ্ধান্তে শুরু হয় প্রাচীন এইসব বৃক্ষ নিধন। মূহুর্তের মধ্যেই খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মী ও সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিবাদের মুখে গাছ কাটা বন্ধ হয়। খবর পেয়ে টাঙ্গাইল পৌর মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর এবং স্থানীয় সরকার টাঙ্গাইলের উপ-পরিচালক মোঃ শিহাব রায়হান আসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
স্থানীয় সরকার টাঙ্গাইলের উপ-পরিচালক মোঃ শিহাব রায়হান জানান, আইনতভাবে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কোনো গাছ কাটতে চাইলে প্রথমত স্থানীয় সরকারে আবেদন করতে হবে এবং তারপর সেই আবেদন বন কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করা হলে বন কর্মকর্তা কর্তৃক অনুমোদন হওয়ার পর প্রকাশ্য নিলাম আহ্বান করে গাছ কাটার প্রক্রিয়া করতে হয়। এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার বরাবর কোনো আবেদন দেয়া হয়নি, তাই কিছুটা নিয়ম বহির্ভূত হয়েছে, আর এজন্য গাছ কাটা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন তিনি।