মির্জাপুর প্রতিনিধি: মির্জাপুর উপজেলায় বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে ভাতিজার লাঠির আঘাতে চাচার মৃত্যু হয়েছে। রবিবার রাতে উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের কুরনী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে শুকনো মরিচের গুড়া মেশানো পানি শরীরে ছিটিয়ে এবং লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তাকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর থেকে ভাতিজা প্রকৌশলী কাজী কামরুজ্জামান পলাশ পলাতক রয়েছেন।
কাজী কামরুজ্জামান পলাশ কুর্নী গ্রামের কাজী রফিকুল ইসলাম বাবুলের ছেলে। সে ঢাকার আগারগাঁও এলজিইডিতে কর্মরত আছেন বলে তার মা কহিনুর বেগম জানিয়েছেন। অপরদিকে নিহত কাজী আলম কুরনী গ্রামের মৃত কাজী মোকছেদের ছেলে ও মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রাক্তন স্বাস্থ্য পরিদর্শক।
পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বাড়ির সীমানা নিয়ে নিহত কাজী আলমের সঙ্গে তাঁর ভাই কাজী রফিকুল ইসলাম বাবুলের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহ যাবত তাদের দুই পরিবারের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। বিষয়টি প্রকৌশলী কাজী কামরুজ্জামান পলাশকে জানালে রবিবার বিকালে সে ঢাকা থেকে বাড়ি আসেন। এ ঘটনা নিয়ে সন্ধ্যায় চাচা কাজী আলমের পরিবারকে গালিগালাজ এবং ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখান পলাশ। এ সময় আশপাশের বাড়ির লোকজন গিয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত করেন।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে কাজী আলম এশার নামাজ শেষে নাতি মারুফকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি এসে কবুতরের ঘর আটকানোর সময় পলাশ পেছন থেকে চাচাকে লক্ষ করে শুকনা মরিচের গুড়া মেশানো পানি তার গায়ে ছুড়ে মারে। মরিচের গুড়া মেশানো পানির যন্ত্রণায় কাজী আলম ছটফট করতে থাকলে পলাশ লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে।
এসময় দাদা-নাতির চিৎকারে বাড়ির লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই ঢাকায় নেওয়া হয়। ভোর ৪টার দিকে সেখানে তার মৃত্যু হয় বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
নাতি মারুফ জানায়, দাদার সঙ্গে রাতে নামাজ শেষে বাড়ি এসে কবুতরের ঘর আটকাতে গেলে পলাশ চাচা মরিচের গুড়া মেশানো পানি দাদার শরীরে ছিটিয়ে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মেরেছে।
কাজী কামরুজ্জামান পলাশের মা কহিনুর বেগম জানান, বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে কাজী আলমের পরিবারের লোকজন আমাকে মারপিট করে আহত করে। এ খবর পেয়ে ছেলে রবিবার বিকেলে বাড়ি আসে। ছেলে কোথা থেকে মরিচের গুড়া সংগ্রহ করেছে তা আমার জানা নেই। আমার ছেলে মরিচের গুড়া মেশানো পানি শরীরে দিয়ে চাচাকে পিটিয়েছে এটা সত্য। আমার ছেলেকে আপনারা বাঁচান।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, এ বিষয়ে পুলিশকে কেউ মৌখিক বা লিখিত কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।