রুপা রায় চৌধুরী: ইউপি থেকে এমপি সব নির্বাচনেই প্রার্থী: লড়তে চান আমৃত্যু

জাতীয় ফিচার মির্জাপুর রাজনীতি

মির্জাপুর প্রতিনিধি: টাঙ্গাইল-৭ মির্জাপুর আসন থেকে আমৃত্যু নির্বাচন করে যেতে চান রুপা রায় চৌধুরী। কখনো জাতীয় সংসদ সদস্য, কখনো উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, আবার কখনো ইউপি চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হচ্ছেন তিনি। তবে প্রতিবারই জামানত খোয়াতে হয়েছে তাঁকে। তবুও নির্বাচনে অংশ নেওয়াই যেন তাঁর নেশায় পরিণত হয়েছে।

 

 

 

জানা যায়, মির্জাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের বাগজান গ্রামের কৃষক হিমাংশু রায় চন্দনের স্ত্রী রুপা রায় চৌধুরী। তিনি একজন কৃষক ও গৃহিণী। তার তিন ছেলে রয়েছে। নির্বাচনে তার স্বামী ও ছেলেরা তার কর্মী হিসেবে কাজ করেন। তিনি স্থানীয়ভাবে কোনো কাজে নন, রাজনৈতিক দলের সক্রিয় নেতা নন; সামাজিক কাজেও নেই তাঁর কোন অংশগ্রহণ। তবে বারবার নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তিনি এলাকায় একটি সুপরিচিত নাম।

স্থানীয়রা বলছে, আর্থিক সচ্ছলতা না থাকলেও রুপা রায় চৌধুরী এর আগেও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ, ২০২২ সালে একই আসনে উপনির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু তিনটি নির্বাচনেই তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। ২০১৬ সালে ভাতগ্রাম ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তখন যাচাই-বাছাইয়ে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।

এবারও টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির প্রার্থী হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন রুপা রায় চৌধুরী। নির্বাচনের উদ্দেশ্যে কয়েক মাস আগে থেকেই তিনি প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

হলফনামা সূত্রে জানা গেছে, কংগ্রেস প্রার্থী রুপা রায় চৌধুরীর দুইটি খাট ছাড়া আর কোনো আসবাবপত্র নেই। অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে নগদ ১ হাজার ও ব্যাংকে মাত্র এক হাজার টাকা রয়েছে। এ ছাড়া অস্থাবর সম্পত্তি বলতে কিছু নেই।

এমপি প্রার্থী রুপা রায়ের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। বর্তমানে কৃষিখাত থেকে তার বাৎসরিক আয় ১০ হাজার টাকা। নির্ভরশীলদের চাকরি থেকে আয় করেন ২ লাখ ৬৩ হাজার ৮৪০ টাকা। এ ছাড়া তার কোনো আয় নেই। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের হলফনামায় তার বাৎসরিক আয় ছিল ৩২ হাজার টাকা। আর নির্ভরশীলদের চাকরিসহ আয় ছিল ১ লাখ ৭০ হাজার ৪০০ টাকা। অস্থাবর সম্পত্তি বলতে তার হাতে বর্তমানে নগদ রয়েছে ১ হাজার এবং ব্যাংকে রয়েছে ১ হাজার টাকা। আসবাবপত্রের মধ্যে শুধু দুইটি খাট, যার মূল্য ৮ হাজার টাকা। তবে ২০১৮ সালে তার নগদ ১৮ হাজার টাকা এবং নিজের ও স্বামীর নামে এক হাজার টাকা ছিল।

এদিকে বর্তমানে স্থাবর সম্পত্তি বলতে নিজের ও স্বামীর নামে ১১৫ শতাংশ জায়গা ছাড়া আর কিছুই নেই। এই জমির মূল্য ধরা হয়েছে ২৩ লাখ টাকা। অন্যদিকে ২০১৮ সালের হলফনামায় জমির পরিমাণ ছিল ৬৯ শতাংশ।

রুপা রায় চৌধুরীর স্বামী হিমাংশু শেখর রায় চন্দন জানান, গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিন শতাধিক ভোট পেয়েছিলেন রুপা। এই আসনের উপনির্বাচনে পেয়েছিল ৪৩৮ ভোট। এবার আরও বেশি ভোট পাবেন। নির্বাচিত না হলেও আমৃত্যু রুপা রায় চৌধুরী প্রার্থী হবেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে রুপা রায় চৌধুরী বলেন, ‘জনগণের সেবা করা আমার ইচ্ছা। আমার বিশ্বাস, জনগণ একবার না-একবার আমাকে সেবা করার সুযোগ দেবে। যতদিন বাঁচব চেষ্টা করে যাব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *