নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। সড়কে হাঁটু পানি জমে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় যান ও মানুষের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়া বাড়ি থেকে তেমন বের হচ্ছেন না মানুষ। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
বুধবার, ৪ অক্টোবর রাত থেকে জেলায় ২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হলেও বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) দুপুর থেকে বেড়ে ৩৫ মিলিমিটারে দাঁড়িয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে জেলার আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও বুধবার দিনগত রাত থেকেই একটানা ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। শুক্রবারও সারাদিন থাকতে পারে বৃষ্টি। টানা বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন শ্রমিক ও দিনমজুররা। শহরের বিভিন্ন এলাকায় স্বাভাবিক দিনের মতো রিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভ্যান দেখা যায়নি। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে কেউ বের হয়নি। রোপা আমনসহ বিভিন্ন সবজি নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছে চাষিরা।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোব) দুপুরে টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড় থেকে বটতলা সড়ক দেখে মনে হয়েছে, এটি শহরের মধ্যে ছোট খাল। পৌরসভা কার্যালয়, সদর উপজেলা ভূমি অফিস, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব, জেলা শিক্ষা অফিসের সামনে হাঁটু পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। এ ছাড়া নিউ মার্কেট, ভিক্টোরিয়া রোড, পার্ক বাজার, শহীদ জগলু রোড, আদালতপাড়া, থানা পাড়াসহ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
টাঙ্গাইল পৌরশহরের রিকশাচালক কবির বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৭০০-৮০০ টাকা আয় করি। আজ সারাদিন বৃষ্টি থাকায় মাত্র আড়াইশ টাকা পেয়েছি। মালিককে টাকা দিয়ে আমার আর কিছুই থাকবে না। বৃষ্টিতে বাইরে মানুষই নাই, ইনকাম করমু কেমনে।
টাঙ্গাইল আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. জামাল উদ্দিন বলেন, বুধবার (৪ অক্টোবর) বিকেল ৩টা থেকে বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় টাঙ্গাইলে ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপ স্থলভাগে উঠে এসেছে। ফলে সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। আগামী শনিবার (৭ অক্টোবর) মধ্যে বৃষ্টি কমে পরিবেশ স্বাভাবিক হবে বলে তিনি জানান।
অন্যদিকে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশল মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, টানা বৃষ্টিপাতে জেলার সব নদ-নদীর পানি বেড়েছে। তিনি বলেন, উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় বন্যার আশঙ্কা থাকলেও টাঙ্গাইলের সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর বলেছেন, শহরে উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হলে তখন আর জলাবদ্ধতার ভোগান্তি থাকবে না।