সখীপুরে চাকরি ছেড়ে কৃষি উদ্যোক্তা হাবীব খানের সাফল্য

অর্থনীতি কৃষি ফিচার সখিপুর

সখীপুর প্রতিনিধি: সখীপুর উপজেলায় কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছেন হাবীব খান (৩০) নামের এক তরুণ উদ্যোক্তা। উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামে ১২ একর জমির ওপর গড়ে তুলেছেন নিজস্ব কৃষি প্রকল্প। সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে লালমাটিতে চাষ করছেন ফিলিপাইনের কালো আখ, টপ লেডি পেঁপে ও রঙিন সাগর কলাসহ উচ্চ ফলনশীল বারোমাসি শজনে। এতে চাকরি ছেড়ে আসা হাবীব খান এক বছরে অন্তত ১৫ লাখ টাকা আয়ের সম্ভাবনা দেখছেন।

 

 

সম্প্রতি তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা হাবীব খান তাঁর সফলতার গল্প বলতে গিয়ে জানান, ২০১৭ সালে বিবিএ শেষ করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু পারিবারিক ঐতিহ্য ও কৃষির প্রতি ভালোবাসা তাঁর পিছু ছাড়েনি। তাই ২০২১ সালে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজের এলাকায় গড়ে তুলেছেন সমন্বিত কৃষি খামার। এখন তাঁর কৃষি প্রকল্পেই প্রতিদিন কাজ করছেন প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক।

 

 

হাবীব খান জানান, চলতি মৌসুমে দেড় একর জমিতে ফিলিপাইনের কালো জাতের আখের (ব্ল্যাক সুগার-কেইন) ১০ হাজার চারা রোপণ করা হয়েছে। প্রতি চারায় চারটি করে আখ হলেও ৪০ হাজার আখ বিক্রি করা যাবে। এতে গত ছয় মাসে খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকা। আগামী দুই মাসে আরও দেড় লাখ টাকা খরচ হবে। আখ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৬ লাখ টাকা।

তিনি আরো বলেন, সাড়ে ৩ একর জমিতে ৩ হাজার রঙিন সাগর কলা চাষে খরচ হয়েছে ৮ লাখ টাকা। বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকা। এক হাজার টপ লেডি জাতের পেঁপে গাছ রোপণ করা হয়েছে। পেঁপেতে এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৪ লাখ টাকা, বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ লাখ টাকা।

এ ছাড়া এবার পরীক্ষামূলকভাবে উচ্চফলনশীল বারোমাসি শজনের আবাদও রয়েছে হাবীব খানের সমন্বিত খামারে। হাবীবের কৃষি প্রকল্প ওই গ্রামের চিত্র পরিবর্তন করে দিয়েছে। তাঁর সাফল্য দেখে অনেকেই ঝুঁকছেন কৃষির দিকে।

কালিয়ানপাড়া গ্রামের স্কুলশিক্ষক মাহমুদুল হাসান বলেন, শিক্ষিত ছেলে; চাকরি বাদ দিয়ে কৃষি কাজে যুক্ত হওয়ায় গ্রামের অনেকেই হাবীবকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছে। এখন সেই হাবীব অনেক তরুণের কাছেই মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এমন তরুণেরা কৃষিতে যুক্ত হলে দেশের কৃষির আরও উন্নতি হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিয়ন্তা বর্মণ বলেন, তরুণ ও শিক্ষিত যুবকেরা কৃষির দিকে ঝুঁকছেন। দেশের কৃষির জন্য এটি অবশ্যই আশা জাগানিয়া ইঙ্গিত। বিশেষ করে সখীপুর উপজেলার মাটিতে নতুন নতুন ফসল চাষে তরুণ উদ্যোক্তারা বেশ আগ্রহী। কৃষি বিভাগ তরুণ উদ্যোক্তাদের এসব আগ্রহের প্রতি সম্মান জানায়। সব সময় উদ্যোক্তাদের পরামর্শ সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *