মির্জাপুর প্রতিনিধি: মির্জাপুরে সম্প্রতি যোগাযোগ, শিক্ষা, বিদ্যুৎ ও স্বাস্থ্য সেবায় কয়েক শত কোটি টাকার অবকাঠামো উন্নয়নমূলক কাজ হওয়ায় বদলে গেছে এলাকার অবকাঠামো উন্নয়ন চিত্র। এছাড়া, যোগাযোগের ক্ষেত্রে সৃষ্টি হয়েছে যুগান্তকারী এক মাইলফলক। প্রতিটি সেক্টরে সুষম উন্নয়নমূলক কাজ হওয়ায় এলাকার সাধারণ জনগণ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খান আহমেদ শুভ এমপি ও উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আরিফুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা গ্রামকে শহরে রুপান্তর বাস্তবায়ন করার লক্ষে গত দেড় বছরে মির্জাপুরে কয়েক শত কোটি টাকার অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। এটি সারা বাংলাদেশের মধ্যে উন্নয়নের এক রোল মডেল হিসেবে পরিচিত হচ্ছে।
গোড়াই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী হুমায়ুন কবীর জানান, মির্জাপুর উপজেলা রাজধানী ঢাকার সন্নিকটে হলেও যোগাযোগসহ উন্নয়নের ক্ষেত্রে দীর্ঘ ৫২ বছর মির্জাপুর পৌরসভা, জামুর্কি, মহেড়া, বানাইল, ফতেপুর, আনাইতারা, ভাওড়া, ওয়ার্শি, বহুরিয়া, ভাদগ্রাম, গোড়াই, লতিফপুর, আজগানা, তরফপুর এবং বাঁশতৈল এই ১৪ ইউনিয়ন ছিল খুবই অবহেলিত। উত্তরে বংশাই ও দক্ষিণে লৌহজং নদীতে ব্রিজ না থাকায় এবং রাস্তাঘাট পাকা না হওয়ায় দুর্গম এলাকার জনসাধারণের কষ্টের সীমা ছিল না।
প্রয়াত এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ একাব্বর হোসেনের প্রচেষ্টায় গত ১৬ বছরের ব্যবধানে মির্জাপুরে উন্নয়নে রোল মডেল হয়েছে। তাঁর মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে খান আহমেদ শুভ নির্বাচিত হয়ে মির্জাপুরকে ঢেলে সাজানোর জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ, বংশাই ও লৌহজং নদীর উপর ১০টি ব্রিজ নির্মাণ, গ্রামীণ পাকা রাস্তা পাকাকরণ, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, দরিদ্রদের জন্য আবাসন প্রকল্প, চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নসহ ব্যাপক অবকাঠামোর উন্নয়ন হচ্ছে।
উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মোঃ আরিফুর রহমান বলেন, গত চার বছরে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮০ মি. মি. পাকা রাস্তা, প্রায় ১২২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫শ মিটার পাকা ব্রিজ, প্রায় ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯০টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ, প্রায় ১০কোটি টাকা ব্যয়ে সামাজিক উন্নয়ন কাজ, প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ, প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি সংরক্ষণ ভবন এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ, প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে খাল খনন করা হয়েছে। এছাড়া ১৫০ কোটি টাকার পাকা রাস্তা, ব্রিজ, কালভার্ট ও অবকাঠামো উন্নয়নমূলক প্রজেক্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুজ্জামান বলেন, এই মন্ত্রণালয়ের অধিনে গত চার বছরে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন এলাকায় ৪০টি ছোট বড় ব্রিজ, প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৮ কি. মি. পাকা রাস্তা এবং প্রায় ২ কোটি টাকার টিআর ও কাবিখার উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ নাজমুল হোসেন বলেন, গত চার বছরের ব্যবধানে মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় প্রায় ১০০শ কোটি টাকার নতুন বহুতল ভবন নির্মাণ হয়েছে স্থানীয় এমপি মহোদয়ের সার্বিক সহযোগিতায়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এই মন্ত্রণালয়ের অধিনে মির্জাপুর-ওয়ার্শি-বালিয়া, মির্জাপুর-নাগরপুর-কেদারপুর, পাকুল্যা লাউহাটি-দেলদুয়ার ও গোড়াই সখীপুর রাস্তায় প্রায় ১৫০ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর এনায়েত হোসেন মন্টু বলেন, উপজেলা পরিষদ ও তার মন্ত্রণালয়ের অধিনে মির্জাপুর উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সহযোগিতায় প্রায় ৯০ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে।
পৌরসভার মেয়র সালমা আক্তার শিমুল জানান, পৌরসভার ৯ ওয়ার্ডে প্রায় ৪০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে। সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ বলেন, এলাকার জনগণ আমাকে নির্বাচিত করেছেন সুষম উন্নয়নের জন্য। এলাকার যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসা ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠনসহ সুষম উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। মির্জাপুরবাসীকে একটি আদর্শ ও মডেল উপজেলা হিসেবে উপহার দিয়ে যেতে চাই। আগামী নির্বাচনে জনগণ যদি আমাকে আবারোও নির্বাচিত করেন প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় মির্জাপুরকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।