মির্জাপুরে বীরনিবাস নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন অনিশ্চিত

মির্জাপুরে বীরনিবাস নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন অনিশ্চিত!

জাতীয় ফিচার মির্জাপুর

মির্জাপুর প্রতিনিধি: মির্জাপুর উপজেলায় নির্মাণ সামগ্রীর সরকারি নির্ধারিত মূল্য ও বর্তমান বাজার দরের মধ্যে মিল না থাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীরনিবাস নির্মাণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে এ উপজেলার অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মিত এই প্রকল্পের ভবিষ্যত নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ জুন এ উপজেলার অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন বীরনিবাস প্রকল্পের অধীনে দ্বিতীয় পর্যায়ে ৯০ জন অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার জন্য বীরনিবাস নির্মাণের দরপত্র আহবান করা হয়। তিন কক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি বীর নিবাস নির্মাণে সরকারি ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৪ লাখ ১০ হাজার ৩৮২ টাকা। দরপত্রে প্রতিটি ইটের মূল্য ধরা হয়েছে ৯.৫০ টাকা, প্রতি কেজি রডের দাম ৮৫ টাকা এবং সিমেন্ট প্রতি বস্তা ৪১০ টাকা হিসেবে। দরপত্রে সিডিউল বিক্রির সর্বশেষ তারিখ ছিল ৫ জুলাই। কিন্তু বর্তমান বাজারে প্রতিটি ইট ১৩ টাকা, রড প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১০৫ টাকা এবং সিমেন্ট ৫৩০ থেকে ৫৫০ টাকা।

 

সরকারি মূল্যের সাথে বাজার দরের বিস্তর ফারাক থাকার কারণে দরপত্রের একটি সিডিউলও বিক্রি হয়নি বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রস্তাবিত বীরনিবাস নির্মাণ আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা।

 

আনাইতারা ইউনিয়নের চামাড়ি ফতেপুর গ্রামের খন্দকার আলমগীর হোসেন, বানাইল ইউনিয়নের ভাবখন্ড গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেন, বহুরিয়া ইউনিয়নের দিঘুলিয়া গ্রামের আবু হানিফ মিয়া, উয়ার্শী ইউনিয়নের মশদই গ্রামের আব্দুল আওয়াল এবং বাশতৈল ইউনিয়নের পাঁচগা গ্রামের ইয়াকুব আলী প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা হতাশা ব্যক্ত করে জানান, তাদের জীবদ্দশায় বীরনিবাসে তাদের বসবাস করার সুযোগ হবে কিনা তা নিয়ে তারা শঙ্কায় রয়েছেন।

 

জেলা বীরনিবাস বাস্তবায়ন কমিটির উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান এ প্রসঙ্গে জানান, শুধু মির্জাপুরে নয়, জেলার ঘাটাইল, বাসাইল, সখিপুর, দেলদুয়ার উপজেলায়ও কোন সিডিউল বিক্রি হয়নি এবং বিষয়টি অনিশ্চয়তায় রয়েছে।

বীর নিবাস প্রকল্প নিয়ে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার ফজলুল হক বীরপ্রতিক বলেন, সরকারের এই মুহুর্তে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য পূণঃনির্ধারণ করতে হবে।

মির্জাপুর উপজেলা বীরনিবাস বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুজ্জামান বলেন, নির্মাণ সামগ্রীর সরকারি দরের সঙ্গে বাজার মূল্যের ব্যবধান হওয়ায় ঠিকাদাররা এই কাজে আগ্রহ দেখান নি।

উপজেলা বীরনিবাস বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা বিনতে মতিন বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দরপত্রের সিডিউল কিনতে কোন ঠিকাদার আসেননি। এছাড়া, সরকারি মূল্য এবং বাজার মূল্যের মধ্যে ফারাক থাকায় এ রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *