মধুপুর প্রতিনিধি: মধুপুর ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বাসিন্দারা বনাঞ্চলে আমতলী বাইদে লেক খনন প্রকল্প বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। শুক্রবার দুপুরে ‘বিক্ষুব্ধ আদিবাসী জনগণ ও বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন’-এর ব্যানারে এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
১৬ জুন সকালে মধুপুরের বিভিন্ন গ্রাম থেকে আগত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারী-পুরুষরা স্থানীয় পীরগাছা সেন্ট পৌলস উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সমবেত হয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে দোখলা বাজারে আসেন। দুপুর ১২টার দিকে তারা দোখলায় বন বিভাগের রেঞ্জ কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করেন।
সমাবেশে জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেকের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন পরিষদের সাবেক সভাপতি অজয় এ মৃ, মুক্তাগাছা ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হিউবাট মৃ, মধুপুর কোচ আদিবাসী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গ বর্মন, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অলিক মৃ, নারীনেত্রী কৌশলা নকরেক, বাংলাদেশ গারো ছাত্রসংগঠনের (বাগাছাস) সভাপতি জন যেত্রা, জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের নেতা প্রবীন চিসিম প্রমুখ।
সমাবেশে মধুপুর গড় এলাকার মুক্তাগাছা, ঘাটাইল, ফুলবাড়িয়া ও ঢাকাসহ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর গারো কোচ সংগঠনের নারী-পুরুষ-ছাত্র-শিক্ষক, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি ও সাধারণরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, যুগ যুগ ধরে বংশাক্রমিকভাবে তাঁরা এসকল জমিতে ধান চাষ করে আসছেন। এ কৃষিজমিতে নতুন করে লেক খনন বা শিশুপার্ক হোক, তা তাঁরা চান না। লেক খনন প্রকল্প বাতিল করতে হবে। এ সময় বক্তারা ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতির বাস্তবায়ন চান এবং সমতল এলাকার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য পৃথক একটি ভূমি কমিশন গঠনের দাবি জানান।
জানা যায়, মধুপুর বনের আমতলী বাইদ এলাকার ১৪টি গারো পরিবার ৪৭ বিঘা জমিতে বংশপরম্পরায় ধান চাষ করে আসছে। ‘স্থানীয় ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সহায়তায় মধুপুর জাতীয় উদ্যানে ইকো ট্যুরিজম উন্নয়ন ও টেকসই ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বন বিভাগ ওই জমিতে লেক খননের উদ্যোগ নেয়।
এজন্য বন বিভাগ গত বছরের ২২ এপ্রিল ওই জমিতে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়ে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে। এর প্রতিবাদে ওই সময় থেকেই ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর স্থানীয় বাসিন্দারা মিছিল-সমাবেশ করে আসছেন। সম্প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক মধুপুরে দলীয় নেতা-কর্মীদের সামনে বক্তৃতায় ওই লেক খনন প্রকল্প শিগগিরই বাস্তবায়ন করা হবে বলে উল্লেখ করায় তাদের এ কর্মসূচি পালিত হলো।