দুর্ঘটনায় ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী শারমিন বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে অ্যাম্বুলেন্সে মৃত্যু

টাঙ্গাইল দুর্ঘটনা ফিচার শিক্ষা

তানভীর আহমেদ, মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি : মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার মোটরসাইকেল দূর্ঘটনাটায় মস্তিষ্কের আঘাত নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথে মারা গেছেন। মৃত্যুর ঘটনাটি ১৮ মে রাত দুইটায় সাভারের এনাম মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য নেয়ার সময় অ্যাম্বুলেন্সে ঘটে৷ এনাম মেডিকেলে পৌছানোর পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

শারমিন আক্তার ১৭ মে রাত ১০ টার দিকে টাঙ্গাইল শহরে বান্ধবী জুই চামেলির জন্মদিনের দাওয়াত থেকে তার বন্ধু জাহিদ হাসান অর্কের মোটরসাইকেল যোগে সন্তোষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিরছিল। ক্যাম্পাসের কাছাকাছি কাগমারী (আরিফ নগর) রাস্তায় কুকুর দেখে মোটরসাইকেল চালক ব্রেক চাপলে তা নিয়ন্ত্রণ হারায় বলে জানিয়েছেন সেখানে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা৷ এতে শারমিন পেছন থেকে ছিটকে পড়ে যায়। তার মাথা ফেটে প্রচুর রক্তপাত শুরু হয়। বাইক চালক জাহিদ হাসান অর্ক শুধু হাত ও পায়ে আঘাত পায়। আশে পাশে থাকা লোকজন দুইজনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল সদরে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শারমিনকে চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হয়। তারা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিতে বলেন। এরপর শারমিনকে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা নেয়া হয়। মস্তিস্কের রক্তক্ষরণ না কমায়, পথে মির্জাপুরের কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং ঢাকা মেডিকেলে রেফার্ড করেন।

অবস্থায় অবনতি হতে থাকায়, ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাভারের এনাম হাসপাতালে যোগাযোগ করে চিকিৎসক এবং অপারেশন থিয়েটারের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু কালিয়াকৈর পৌঁছানোর পর শারমিনকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি আনুমানিক ১টার দিকে বিকল হয়ে যায়। তার প্রায় আধা ঘন্টা পর এনাম মেডিকেল থেকে অ্যাম্বুলেন্স এসে শারমিনকে সাভারে নিয়ে যায়। সেখানে পৌঁছানোর পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শারমিনের বাড়ি রংপুর সদরে। শারমিন ২০১৪ সালে রংপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং রংপুর সরকারি কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এইচএসসি পাস করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতক শেষ বর্ষের পরিক্ষা শেষ করে ফলাফলের অপেক্ষায় ছিলেন।

শারমিনের মৃত্যুতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মীর মো. মোজাম্মেল হক বলেন, শারমিনের মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। ক্যাম্পাসের বাইরে দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট হয়ে যাওয়া যান্ত্রিক ত্রুটি হতে পারে। এ ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ ছাড়া আমাদের কিছু বলার নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *