টাঙ্গাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফলতি: হুমকিতে শত হেক্টর জমি, ঘরবাড়ি!

টাঙ্গাইল সদর দুর্ঘটনা দুর্নীতি পরিবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফলতিতে যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর তীরের শত শত হেক্টর ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি হুমকির মুখে রয়েছে।

 

এলাকাবাসীর অভিযোগ, জিওব্যাগ ফেলার প্রায় ৩০০ মিটার দূর থেকে বাল্কহেডের মাধ্যমে বালু তোলার কারনে এসব জমি হুমকির মুখে পরেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করেও কোন সুরাহা পায়নি স্থানীয়রা।

 

গত বর্ষা মৌসুমে টাঙ্গাইল সদরের অমরপুর ও চরপৌলি এলাকায় যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর ভাঙনে সাতটি বসত ভিটা, ফসলি জমি, সড়ক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে যায়। এছাড়াও বসতবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে। নদী ভাঙন রোধে আপদকালীন জরুরী অস্থায়ী তীর প্রতিরক্ষামুলক কাজের অংশ হিসেবে যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর বাম তীরে ৯৮ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয়ে ৫১০ মিটার এলাকাজুড়ে জিও-টিউব ও জিও-ব্যাগ ডাম্পিং এবং প্লেসিং কাজ করা হচ্ছে। শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে আপদকালীন জরুরী প্রতিরক্ষামূলক এই কাজের শুভ উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শরীফা হক।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের যোগসাজসে ভাঙন কবলিত এলাকার সর্বোচ্চ ৩০০ মিটার দূর থেকে বাল্কহেডের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে নদীর উভয় পাশের শত শত হেক্টর ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি হুমকির মুখে পরেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসনকে অবগত করেও কোন সুরাহা পায়নি তারা।

অমরপুর এলাকার রফিক নামে একজন বলেন, এতো টাকা ব্যয়ে বাঁধ দিচ্ছে কিন্তু মাটি সেই নদী থেকেই নিচ্ছে তাতে লাভ কী? যদি চর কেটে আনতো তাও হতো কিন্তু নদী পাড় থেকেই মাটি আনছে তাও ড্রেজার দিয়ে। আমাদের বিপদ কোনোদিন মুছবেনা।

আব্বাস আলী নামে একজন বলেন, এই পার বাঁধ দিতাছে কিন্তু ওপার ভাঙ্গবে, এই বাঁধ দিয়ে কোনো লাভ নাই। কারণ ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটলে সেই বাঁধ টিকবেনা। বলা চলে মাছের তৈল দিয়ে মাছ ভাজতাছে।

নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়া জহুরা বেগম বলেন, কয়েকবার নদী ভাঙ্গনের স্বীকার হয়েছি এখন যে বাঁধ দিতাছে তাতে কোন লাভ নাই। যেখানে বাঁধ দিতাছে তার থেকে ৩০০ মিটার দূরে থেকে মাটি ডেজার দিয়ে কাটতাছে তাতে কোন লাভ নাই।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাদিক এন্টারপ্রাইজের পক্ষে ঠিকাদার রনি বলেন, দূর থেকে বালু আনা হচ্ছে। যারা অভিযোগ করছেন তারা মিথ্যা বলছেন। আমরা সঠিক নিয়মেই কাজ করছি।৫১০ মিটার এলাকায় ভাঙনরোধে ২৬ হাজার ৫০ টি জিওব্যাগ ও ৭৬১ টি জিও টিউব যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর তীরে ফেলা হবে।

এদিকে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মতিউর রহমান ঠিকাদারের পক্ষ নিয়ে বলেন, সামান্য বালু দূর থেকেই আনা হচ্ছে তাতে কোনো সমস্যা হবে না।

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক বলছেন, ভাঙনরোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বালু উত্তোলনের বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *