মধুপুরে মাকে খুনের ৭ ঘণ্টা পর মাদকাসক্ত ছেলে আটক

অপরাধ মধুপুর

মধুপুর প্রতিনিধি: মধুপুরে মাদকাসক্ত ছেলের হাতে রাজিয়া বেগম (৪৫) নামের এক মায়ের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ঘাতক ছেলে রাজিব হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার, ১৪ মার্চ রাত সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার মহিষমারা ইউনিয়নের মধ্য শালিকা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আলোকদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুলাল হোসেন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘাতক রাজিব হোসেন ওই গ্রামের খায়রুল ইসলাম (৫০) ও রাজিয়া বেগম (৪৫) দম্পতির ছেলে।

 

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মাদকাসক্ত রাজিব ওই গ্রামের মানসিক ভারসাম্যহীন খায়রুলের ছেলে। দরিদ্র পরিবার তাকে ভালো করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছে। কষ্ট হলেও নিরাময় কেন্দ্রে রাজিবকে ভর্তি করা হয়। ভবঘুরে বাবা সংসার, স্ত্রী, ছেলে কারো খোঁজ নেন না। মা রাজিয়া অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। নিরাময় কেন্দ্র থেকে সম্প্রতি চিকিৎসা নিয়ে রাজিব বাড়িতে এসেছে। শুক্রবার রাতে হঠাৎ মায়ের উপর অজ্ঞাত কারণে চড়াও হয় রাজিব। এক পর্যায়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। স্ত্রী শোভা খাতুন (২৫) বাধা দিতে গেলে তাকেও কোপায়। শোভা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। মায়ের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর পাশে আনারস বাগানে নিয়ে পুঁতে রাখার চেষ্টাকালে এলাকাবাসী জানতে পারে এই নৃশংসতার কথা। এগিয়ে এলে রাজিব সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, রাজীব মিয়া একজন নিয়মিত মাদকাসক্ত। নেশার টাকার জন্য প্রায়ই সে তার মায়ের সঙ্গে খারাপ আচরণ করত। শুক্রবার সন্ধ্যায় নেশার টাকার জন্য মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে। নেশার টাকা না দেওয়ার কারণে ইফতারের পরে রাত সাড়ে সাতটায় মাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

এ সময় মাদকাসক্ত রাজিবের স্ত্রী শোভা খাতুন (২৫) শাশুড়িকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তাকেও কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করেছে এবং হাতের ৩টা আঙুল কেটে ফেলে। আশপাশের লোকজন এসে স্ত্রী শোভা খাতুনকে উদ্ধার করে প্রথমে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

মধুপুর থানার ওসি এমরানুল কবীর বলেন, ঘটনার সাত ঘণ্টার মধ্যে পুলিশি অভিযানে রাত তিনটার দিকে মহিষমারার ঘোনাপাড়া থেকে ঘাতক রাজিবকে আটক করা হয়েছে। পরবর্তী আইনী প্রক্রিয়া চলমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *