যমুনা রেলওয়ে সেতুর পিলারে ফাটলে উদ্বেগ : কর্তৃপক্ষ বলছে ‘ক্ষতিকর নয়’

অর্থনীতি ইতিহাস ও ঐতিহ্য দুর্ঘটনা ভূঞাপুর

ভূঞাপুর প্রতিনিধি : যমুনা নদীর ওপর নির্মিত রেলওয়ে সেতুর কয়েকটি পিলারে ফাটলের ছবিতে উদ্বেগ জানিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর সেগুলোকে স্থাপনার জন্য ক্ষতিকর নয় বলে দাবি করেছে যমুনা রেলসেতু কর্তৃপক্ষ। রেলসেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, এগুলো ফাটল নয় বরং প্রচণ্ড গরমের কারণে সৃষ্ট ‘হেয়ারক্র্যাক’।

 

যমুনা রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী নাইমুল হক বলেন, রেলসেতুর পশ্চিম প্রান্তের আট-দশটি পিলারের নিচের অংশে কিছু জায়গায় চুল আকৃতির ফাঁকা বা হেয়ারক্র্যাক দৃশ্যমান হয়েছে। যা ঘষে রেজিন বা আঠার প্রলেপ দিয়ে মেরামতের প্রক্রিয়া চলছে।

তিনি আরও বলেন, এটি নির্মাণ কাজের কোনো ক্রটি নয়, আবার হানিকম্ব হয়েছে সেটাও নয়। মূলত প্রচণ্ড গরম বা বৈরী আবহাওয়ায় সেতুর পিলারে শূন্য দশমিক এক থেকে তিন মিলিমিটার পর্যন্ত ক্ষুদ্র আকৃতির ক্র্যাক বা চুল আকৃতির ফাঁকা সৃষ্টি হয়েছে। যা মোটেও সেতুর কংক্রিটের অবকাঠামো বা স্থাপনার জন্য ক্ষতিকর নয়। এতে ট্রেন চলাচলে কোনো প্রভাবও পড়বে না।

তবে উদ্বোধনের এক বছরের ব্যবধানে এমন ফাটল দেখা দেওয়ায় নির্মাণক্রটি এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে নানা মন্তব্য করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে।

এ বিষয়ে সহকারী প্রকৌশলী নাইমুল হক বলেন, ফেইসবুকে কেউ অসৎ উদ্দেশ্যে চুল আকৃতি ফাঁকা স্থানগুলো আরও বড় দেখিয়ে ছবিগুলো পোস্ট করে জনমনে আতংক ছড়িয়েছে।

রেল সেতু প্রকল্পের ব্যবস্থাপক (প্রজেক্ট ম্যানেজার) মার্ক হ্যাবি জানান, এটি তাপমাত্রাজনিত হেয়ার ক্র্যাক, নির্মাণজনিত কোনো ত্রুটি নয়। এগুলো সেতুর কংক্রিট কাঠামো বা স্থাপনার জন্য ক্ষতিকর নয়। ফাটলগুলো রেজিন বা বিশেষ আঠার মিশ্রণ দিয়ে একে একে রিপেয়ার করা হচ্ছে এবং সেতুর স্থায়িত্ব বা ট্রেন চলাচলে কোনো প্রভাব পড়বে না।

 

২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুর নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর ২০২১ সালের মার্চে সেতুর পিলার নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়।

চলতি বছরের গত (১৮ মার্চ) উদ্বোধন হওয়া ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ডুয়েল গেজ রেলসেতুটি দেশের প্রথম এবং সবচেয়ে দীর্ঘ রেলসেতু হিসেবে রেল যোগাযোগে নতুন অধ্যায় সূচনা করেছে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাইকা দিয়েছে প্রায় ৭২ শতাংশ অর্থ, বাকিটা বহন করেছে বাংলাদেশ সরকার। সেতুটি জাপানের ওটিজি ও আইএইচআই কোম্পানি যৌথ উদ্যোগে নির্মাণ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *