মির্জাপুরে কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবাগ্রহীতারা চরম দুর্ভোগের শিকার

দুর্ঘটনা মির্জাপুর স্বাস্থ্য

মির্জাপুর প্রতিনিধি: মির্জাপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাওয়ার কুমারজানী কমিউনিটি ক্লিনিকটি বছরের প্রায় চার মাসই পানিতে ডুবে থাকে। ফলে এই সময়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা অন্যের বাড়িতে বসে চিকিৎসাসেবা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসা নিতে আসা প্রায় ১০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

 

জানা যায়, গ্রামের দরিদ্র মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে ১৯৯৮ সালে সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়। এই উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নে মোট ৫৪টি ক্লিনিক রয়েছে। এর মধ্যে বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের পূর্বপাড়ায় মো. মোসলেম উদ্দিনের দেওয়া জমিতে এই ক্লিনিকটি নির্মাণ করা হয়। এ ক্লিনিকে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০ থেকে ৭০ জন রোগীকে সেবা দেওয়া হয়।

ক্লিনিকের সামনে পাকা রাস্তা থাকলেও এটি রাস্তা থেকে ৫-৬ ফুট নিচু জমিতে অবস্থিত। বর্ষা মৌসুম শুরু হলেই জুনের শেষের দিকে জমিতে পানি উঠে ক্লিনিক তলিয়ে যায়। এই পানি সাধারণত অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে নেমে যায়। ফলে বছরের প্রায় চার মাস ক্লিনিকটি অব্যবহৃত থাকে এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা অস্থায়ী আশ্রয়ে সেবা দিতে বাধ্য হন। ক্লিনিক ভবনটির বিভিন্ন অংশের পলেস্তারাও নষ্ট হয়ে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

প্রতিবছরের মতো এবারও ক্লিনিকটি পানির নিচে ডুবে থাকায় পার্শ্ববর্তী লোকমান হোসেনের বাড়িতে বসে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। সেবাগ্রহীতারা নানা সমস্যা নিয়ে ওই বাড়িতে ভিড় করেন।

বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের বাসিন্দা ছোবাহান মিয়া বলেন, মানুষের বাড়িতে গিয়ে ভিড় করে ওষুধ নেওয়াটা অস্বস্তিকর। রোগীরা ঠিকমতো তাদের সমস্যার কথা বলতে পারে না।

গ্রামের পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা মিজানুর রহমান মিঠু অভিযোগ করেন, কোন বাড়িতে বসে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়, তা অনেক সেবাপ্রার্থীই জানেন না। এতে তারা ভোগান্তিতে পড়েন।

অস্থায়ী সেবাকেন্দ্রের বাড়ির মালিক লোকমান হোসেন বলেন, ক্লিনিকটি তলিয়ে যাওয়ায় আমাদের বাড়িতে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। সপ্তাহের প্রতিদিন ভিড় জমে। এতে আমাদের দৈনন্দিন কাজের অনেক অসুবিধা হয়। কিন্তু গ্রামের মানুষের জন্য ছাড় দিতে হচ্ছে।

বাওয়ার কুমারজানী কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) জিয়াসমিন আক্তার বলেন, ক্লিনিকটি প্রতিবছর চার মাস পানির নিচে থাকে। তখন অন্যের বাড়িতে গিয়ে ওষুধ দেওয়ায় আমারও যেমন অসুবিধা হয়, সেবাগ্রহীতাদেরও তেমনি ভোগান্তি হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ফরিদুল ইসলাম জানান, রাস্তার চেয়ে ক্লিনিকটি বেশ নিচু জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে, তাই বর্ষার পানি এলেই এটি তলিয়ে যায়।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ বি এম আরিফুল ইসলাম জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *