ফ্যাসিবাদের সঙ্গে ফ্যাসিবাদ ব্যবস্থাকে বিদায় করতে হবে- জোনায়েদ সাকি

টাঙ্গাইল সদর রাজনীতি সংগঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, শাসকের সঙ্গে শাসন ব্যবস্থার বদল করতে হবে। ফ্যাসিবাদের সঙ্গে ফ্যাসিবাদ ব্যবস্থাকে বিদায় করতে হবে। এটা আমাদের সংগ্রাম। ফ্যাসিবাদের পুরো ব্যবস্থাকে যদি আমরা বদলাতে না পারি তাহলে মানুষ এ লড়াইতে আর আসবে না।

 

রবিবার, ২৭ জুলাই টাঙ্গাইল স্থানীয় শহীদ মিনারে গণসংহতি আন্দোলনের জুলাই সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি আরো বলেন, বছরের পর বছর লড়াই করে মানুষ ধীরে ধীরে বারুদের স্তূপে পরিণত হয়েছিল। বিশেষ করে ২০১১ সালে শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাদ দিয়ে সংবিধান সংশোধন করলো, তখন বোঝা গেছে তারা ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায়। তাদের বাসনা ছিল নিজেদের চিরস্থায়ী বন্দবস্তে পরিণত করা। আমরা বলেছি এ সংবিধান মহান মুক্তিযুদ্ধের ওপর দাঁড়িয়ে হয়েছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, সে আকাঙ্ক্ষা সংবিধানে প্রতিফলন হয়নি। প্রতিফলন হয়নি বিধায় সবে ক্ষমতা একজন ব্যক্তির কাছে কেন্দ্রীভূত করা হয়েছে। যিনি প্রধানমন্ত্রী হন, তার হাতে সব ক্ষমতা। আর তিনি পুরো রাষ্ট্রটা নিজের পকেটে ঢুকিয়ে জনগণের ওপর তীর চালিয়েছেন। এরা সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এ তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা এসেছিল, কিন্তু সেটি বেশিদিন টিকেনি।

তিনি বলেন, আমাদের অনেক আত্মত্যাগ রয়েছে। বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপরে হামলা-মামলা, গুম-খুন হয়েছে। তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।

তিনি বলেন, আমরা দেখছি তারা গণতন্ত্র ও দেশের উন্নতির কথা বলেন, কিন্ত তাদের গণতন্ত্র ও দেশের উন্নতির মধ্যে আমাদের শ্রমিক নেই, নারী নেই। নিপীড়িত জাতি ও জনগোষ্ঠী নেই। আমাদের তরুণ ছাত্রও নেই। আগামী দিনের এ তরুণদের কাজে লাগাতে হবে। তরুণদের কাজে লাগাতে হলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং কর্মসংস্থান তৈরিতে নতুন নীতি দরকার।

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, এই ঐতিহাসিক গণ–অভ্যুত্থানে যাঁরা রক্ত দিয়েছেন, তাঁরা আমাদের নতুন যাত্রার দিশারি। আজকে শহীদের মায়েদের এখানে বলতে হচ্ছে, আমাদের শহীদদের হত্যার এখনো বিচার হয়নি। শহীদেরা এখনো রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পাননি। আমাদের আহতরা এখনো সম্পূর্ণ চিকিৎসা পায়নি। শহীদদের পরিবারের ও আহতদের জীবনের দায়িত্ব নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা পরিষ্কার করে বলি, আপনারা অভ্যুত্থানের ওপর দাঁড়িয়ে আছেন। এগুলো আপনাদের প্রথম দায়িত্ব ছিল।

গণসংহতি আন্দোলন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার আহ্বায়ক মোফাখখারুল ইসলামের সভাপতিত্বে জেলার সংগঠক তুষার আহমেদের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় সদস্য আলিফ দেওয়ান, জাতীয় পরিষদের সদস্য আশরাফুল আলম, ছাত্র ফেডারেশনের টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি ফাতেমা রহমান বিথি, পৌর কমিটির সদস্য সচিব ফারজানা জেসমিন, নিহত মারুফের মা মোরশেদা বেগম প্রমুখ।

সমাবেশের আগে জোনায়েদ সাকি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সন্তোষে মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *