মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্ত: টাঙ্গাইলের তানভীর ও হুমাইরার দাফন সম্পন্ন

ইতিহাস ও ঐতিহ্য টাঙ্গাইল সদর মির্জাপুর সখিপুর সংগঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজে বিমান বাহিনীর জঙ্গি বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত হয়েছেন টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার শিক্ষার্থী মেহেনাজ আক্তার হুমাইরা ও মির্জাপুর উপজেলার শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ।

দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে শোকে ভারী হয়ে উঠেছে জেলার পরিবেশ। মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে সখিপুরে আফরিনের এবং মির্জাপুরের তানভীরের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ (১৪) মির্জাপুরের নকভাত গ্রামের রুবেল মিয়ার ছেলে। পরিবারের সঙ্গে ঢাকার উত্তরায় থাকত সে।

অন্যদিকে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মেহেনাজ আক্তার হুমাইরা (৮) সখিপুরের হতেয়া কেরানিপাড়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে। দেলোয়ার হোসেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজেরই শিক্ষক।

দুর্ঘটনার পর তাদের মৃত্যুর খবর জানা গেলে সোমবারই জেলার মির্জাপুর ও সখিপুরের আকাশ শোকে ভারী হয়ে ওঠে। পরে মঙ্গলবার ভোরে তাদের মরদেহ এলাকায় পৌঁছালে দুজনের গ্রামেই স্বজনদের আহাজারিতে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।

কেরানীপাড়া প্রাইমারি স্কুল মাঠে জানাযা শেষে হতেয়া কেরানীপাড়া সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয় মেহেনাজ আফরিন হুমাইরাকে। অপরদিকে জানাযা শেষে মির্জাপুরের নবভাতগ্রাম কবরস্থানে দাফন করা হয় তানভীর আহমেদকে।

নিহত তানভীরের চাচাতো ভাই সজিব বলেন, চাচা-চাচি সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার জন্য মাইলস্টোন কলেজে ভর্তি করেছিলেন। তানভীরও ছোটবেলা থেকে ভাল ফলাফল করে আসছিল। জানিনা চাচা-চাচি কিভাবে সন্তান হারানোর শোক সইবেন।

তানভীরের ছোট ভাই তাসবিরও ওই স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। তবে সে ছুটির পর বাসায় ফেরায় প্রাণে বেঁচে গেছে, বলে জানান তিনি।

এদিকে হুমাইরার মামা ফিরোজ আহমেদ বলেন, হুমাইরা আমাদের প্রিয় একজন ছিল। সে অল্প বয়সে চলে গেলো আমাদের ছেড়ে। আপনারা সবাই হুমাইরার জন্য দোয়া করবেন।

সোমবার উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনের ওপর আছড়ে পড়ে বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই বিমান।

প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ অনুযায়ী, স্কুলে মাঠে বিধ্বস্ত হওয়ার পর বিমানটি ছেঁচড়ে গিয়ে ধাক্কা খায় দোতলা একটি অ্যাকাডেমিক ভবনে। অগ্নিগোলকে পরিণত হওয়া সেই বিমানের শিখা স্কুল ভবনটিকেও গ্রাস করে নেয়।

তখন স্কুল ছুটির সময়, অনেক অভিভাবকও ভিড় করেছিলেন ভবনটির কাছে। দুর্ঘটনার পর ভবনের প্রবেশ পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বের হতে পারছিলেন না কেউ।

উদ্ধার অভিযান শেষে জঙ্গি বিমানের পাইলটসহ ১৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ১৭১ জনকে ওই ভবন থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়, তাদের অধিকাংশই মারাত্মকভাবে দগ্ধ, আর বেশিরভাগই শিশু।

আহতদের মধ্যে আরো দশজন রাতে হাসপাতালে মারা গেলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয় ২৭ জন। এখনো ৭৮ জন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *