
সখীপুর প্রতিনিধি: সখীপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ময়থাচালা এলাকায় ভাড়া ফ্লাটে বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম শেখ ফারুকুজ্জামান (৭৪)-এর গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ সোমবার, ১৪ জুলাই বেলা তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, মারা যাওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম শেখ ফারুকুজ্জামান ফ্ল্যাটটিতে একাই থাকতেন। তাঁর বাড়ি বাসাইল উপজেলার ফুলকি মধ্যপাড়া গ্রামে। ফারুকুজ্জামান স্বাধীনতার পর ঢাকায় চলে যান। সেখানে তিনি ব্যবসা-বাণিজ্য করেন। ধানমন্ডিসহ ঢাকার কয়েকটি স্থানে তাঁর বাসা রয়েছে। তাঁর এক ছেলে এক মেয়ে। ফারুকুজ্জামানের বয়স হওয়ার কারণে ছেলে শেখ দুর্জয় জামান ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
ছেলে শেখ দুর্জয় জামান জানান, দুই দিন ধরে ফোন ধরছিলেন না বাবা। অবশেষে ঢাকা থেকে এসে দেখেন বাবা যে ফ্ল্যাটে থাকেন, তার ভেতর থেকে দরজা বন্ধ, কোনো সাড়াশব্দ নেই। একপর্যায়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখেন, পড়ে আছে বাবার লাশ। মরদেহ থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, দুই দিন আগে তিনি মারা গেছেন।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, বছর দশেক আগে স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয় শেখ ফারুকুজ্জামানের। শেষ বয়সে এসে তিনি নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন। মাস দুয়েক আগে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে অভিমান করে তিনি ঢাকা থেকে সখীপুর চলে আসেন। পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শাহ আলমের চারতলা ভবনের দোতলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। দুই মাস ধরে ওই ফ্ল্যাটে একাই থাকছিলেন ফারুকুজ্জামান। দুই দিন ধরে ছেলেমেয়েরা মুঠোফোনে বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। পরে ছেলে শেখ দুর্জয় জামান ঢাকা থেকে আজ দুপুরের দিকে সখীপুরে এসে বাবার সেই ভাড়া বাসা খুঁজে পান। ভেতর থেকে বন্ধ পাওয়ায় অবশেষে দরজা ভেঙে রান্নাঘরে বাবার লাশ দেখতে পান ছেলে।
ছেলে শেখ দুর্জয় জামান বলেন, আমার বাবা ঢাকায় থাকতে পছন্দ করতেন না। এ কারণে তিনি সখীপুরে চলে আসেন। আমরা বাবার সঙ্গে সব সময় ফোনে খোঁজখবর রাখতাম। বাবা যে এভাবে আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন তা বুঝতে পারেনি।
এ বিষয়ে সখীপুর থানার উপপরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। লাশ থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই ছেলের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।