ঘাটাইলে শিশু ধর্ষণের অভিযোগ, মামলা করায় নানারকম হুমকি!

অপরাধ আইন আদালত ঘাটাইল

ঘাটাইল প্রতিনিধি: ঘাটাইলে স্থানীয় মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী এগারো বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। থানায় এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ওই শিশুটির বাবা লিখিত অভিযোগ করলে নানারকম হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

 

 

অভিযোগে বলা হয়, গত ৩ জুন বিকেলে ১১ বছরের শিশুটিকে বাড়িতে একা পেয়ে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করে স্থানীয় প্রতিবেশী যুবক সাইফুল। সেদিন শিশুটির দাদি বাড়িতে এসে দেখে ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। পরে ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলে তিনি ঘরের ভেতরে সাইফুলকে আপত্তিজনক অবস্থায় দেখতে পান। তখন দৌড়ে পালিয়ে যায় সাইফুল। সে সময় এ বিষয়ে দাদিকে বিস্তারিত জানায় শিশুটি।

শিশুটির পরিবার জানায়, ধর্ষণের শিকার মেয়েটি এখন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অন্যান্য শিশুর সঙ্গে যে একটু খেলাধুলা করতে যাবে, সেটাও এখন আর সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি ঘরের বাইরে বের হতেও সাহস পাচ্ছে না মেয়েটি। এমন একটা সংকটাপন্ন অবস্থায় শিশুটিকে নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছেন তার বাবা কামাল হোসেন।

এদিকে অভিযোগ তুলে নিতে শিশুটির বাবা কামাল হোসেনকে হুমকি-ধমকিসহ আসামি সাইফুলের পরিবারের সদস্যরা নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। মামলা প্রত্যাহার না করলে সাইফুলের আত্মীয়রা তার হাত-পা ভেঙে দেবে বলেও প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছেন। ভীত হয়ে থানায় আবারও জিডি করেছেন বলে জানান কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, মেয়েকে ছোট রেখে স্ত্রী অন্যত্র চলে গেলে দাদির কাছেই বড় হচ্ছে সে। ঘটনার দিন তিনি অটোরিকশা চালাতে বাড়ির বাইরে ছিলেন। মেয়ের দাদিও বাড়িতে ছিলেন না। এই সুযোগে প্রতিবেশী সাইফুল ঘরে ঢুকে ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে আমার শিশু মেয়েকে ধর্ষণ করে। অবুঝ মেয়েটিকে নিয়ে সামাজিক বিড়ম্বনাসহ নানান প্রতিবন্ধকতা তিনি কীভাবে পাড়ি দেবেন সে চিন্তায় তিনি অস্থির। ঘটনার পর থানায় মামলা করলেও আসামি এখনো গ্রেপ্তার হয়নি।

আসামি ধরতে প্রথমে আগ্রহ থাকলেও এখন অনাগ্রহ দেখা যাচ্ছে জানিয়ে কামাল হোসেন আরও বলেন, সাইফুলের বাবা আবুল হোসেন প্রবাসী এবং অনেক টাকাপয়সার মালিক। মামলা করায় সাইফুলের চাচা জয়নাল আবেদিন, আব্দুল কদ্দুস ও মফিজ উদ্দিন তাকে হুমকি দিচ্ছেন। তাড়াতাড়ি আপস-মীমাংসা না করলে তার হাত-পা ভেঙে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তাকে কয়েক দফা জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সাগরদীঘি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক আতাউর রহমান বলেন, ধর্ষণ মামলায় বাদী কামাল হোসেনকে আসামি সাইফুল ইসলামের পরিবার সদস্যদের কর্তৃক হুমকি-ধমকি দেওয়ার বিষয়ে লিখিত একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টিকে আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সাগরদীঘি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক আব্দুল মতিন বলেন, আসামি ধরতে একাধিক অভিযান চালানো হয়েছে এবং তাকে আটকের সব ধরনের চেষ্টা চলমান রয়েছে।

ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশাররফ বলেন, ঘটনার তিন দিন পরে শিশুটির বাবা থানায় এসে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। এরই মধ্যে আসামি বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলেও তাকে আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *