
মির্জাপুর প্রতিনিধি: মির্জাপুর উপজেলায় অনুমোদনহীন চারটি ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাস ও কালো ধোঁয়ায় প্রায় ১৫ একর জমির ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বহুরিয়া ও পাথালিয়াপাড়া এলাকায় স্থানীয় কৃষকরা এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, উপজেলার বহুরিয়া ও গোড়াই ইউনিয়নে তিন ফসলি জমিতে আরবিসি, বাটা, এমএসবি, এইচইউবি, বিএন্ডবি, রান ও সানসহ ৭টি ইটভাটা নির্মাণ হয়। এসব ইটভাটার অনুমোদন না থাকায় পরিবেশ অধিদপ্তর চারবার জরিমানা, সম্পূর্ণ চিমনি গুড়িয়ে দেওয়াসহ ইটভাটাগুলো বন্ধের নির্দেশনা দেয়। সবশেষ পরিবেশ অধিদপ্তর ৬টি ইটভাটার বিরুদ্ধে মামলা করেন। কিন্তু ইটভাটার মালিকরা অস্থায়ী চিমনি তৈরি করে ইট প্রস্তুত অব্যাহত রাখেন।
বহুরিয়া ও পাথালিয়াপাড়া এলাকার শিরিন সুলতানা, জুয়েল মিয়া, রাজিয়া, খোরশেদ সিকদার ও তাসলিমা বেগম বলেন, এমএসবি, আরবিসি ও বাটা, এইচইউবি নামক ইটভাটার আগুন নেভানোর সময় নির্গত বিষাক্ত গ্যাস ও কালো ধোঁয়া বাইরে ছড়িয়ে ১৫ একর জমির ধান পুড়ে যায়। কয়েকদিন পর এই ধান কৃষকদের ঘরে উঠানোর কথা। চারটি ইটভাটা নির্মাণের ফলে ওই এলাকার কৃষি জমি এখন নেই। ধানের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ইটভাটার মালিক অনেককে ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়েছেন কিন্তু তা ক্ষতির তুলনায় একেবারেই কম। তারা আরও বলেন, ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাস ও কালো ধোঁয়ায় এলাকার ৫টি প্রজেক্টের সাইফুল, বদু, আনন্দ রাজবংশী, বাছেদ, শরিফসহ প্রায় শতাধিক কৃষকের ধান নষ্ট হয়ে গেছে।
বাটা ইটভাটার মালিক আকবর বলেন, আমার ভাটার এরিয়াতে যতটুকু পড়েছে তাদের টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে মোট কতজনকে এবং মোট কত টাকা শতাংশ দেওয়া হয়েছে তা তিনি বলেননি।
এমএসবি ইটভাটার মালিক ফরিদ বলেন, আমি প্রজেক্টের লোকদের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১২ একর জমির ক্ষতিপূরণ দিয়েছি। এরমধ্যে ৫৩৯ শতাংশ জমির জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে শতাংশ প্রতি ৫০০ টাকা ও কিছু লোকদের সর্বনিম্ন ২০০ টাকা করে দিয়েছি।
বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ মিয়া বলেন, অভিযোগের বিষয়টি আমি শুনেছি। এ বিষয়ে প্রশাসন যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মাহমুদা খাতুন বলেন, কৃষি বিভাগের প্রত্যয়নপত্র ছাড়াই ইটভাটাগুলো পরিচালিত হচ্ছে। উপ-সহকারী কৃষি অফিসারের মাধ্যমে বিষাক্ত গ্যাসে ধান পুড়ে যাওয়ার বিষয়টি জেনেছি। উপজেলা পরিষদের মিটিংয়ে ইউএনওকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। ভবিষ্যতে ওই জমিতে কৃষি আবাদের সম্ভাবনা কম। স্থানীয় কৃষকরা লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।