
কালিহাতী প্রতিনিধি: কালিহাতী উপজেলায় পাট চাষিদের প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ টাকার একটি অংশ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
বুধবার, ৯ এপ্রিল দিনব্যাপী উপজেলা পরিষদের হলরুমে ৭৫ জন চাষি নিয়ে এ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রশিক্ষণে চাষিদের জন্য সকালের নাশতা ও দুপুরের খাবারের বরাদ্দ টাকা থেকে আত্মসাৎ করা হয়েছে অভিযোগ উঠছে।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ প্রকল্পের’ আওতায় তালিকাভুক্ত পাট চাষিদের নিয়ে দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাইরুল ইসলাম।
জানা যায়, প্রশিক্ষণে পাট চাষিদের সম্মানী ভাতা, নাশতা ও দুপুরের খাওয়ার জন্য ৬৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে সকালের নাশতার জন্য ৮০ টাকা, দুপুরের খাবার জন্য ৩০০ টাকার বরাদ্দ ছিল। কিন্ত নাশতার জন্য ৪০ টাকার এবং দুপুরের খাবারের জন্য ১৫০ টাকা খরচ করা হয়েছে চাষিদের জন্য। এতে মোট ১৪ হাজার ২৫০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে।
প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া পাট চাষিরা জানান, সকালের নাশতায় তাদের পাঁচ টাকা মূল্যের দুটি করে লেক্সাস বিস্কুট, একটি করে সমুচা ও একটি করে মিষ্টি দেওয়া হয়েছে। যার সর্বোচ্চ মূল্য ৪০ টাকা। দুপুরের খাবারে দেওয়া হয় মোরগ পোলাও; যার মূল্য ১৫০ টাকা।
আবু সামা নামের একজন চাষি বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রশিক্ষণ করেছি। সকালে নাশতা ও দুপুরের খাবারের জন্য সর্বোচ্চ ১৯০ টাকা খরচ হয়েছে। ৩৮০ টাকা বরাদ্দের বিষয়ে আমরা জানি না।’
আরেক চাষি আবু সাঈদ বলেন, ‘নাশতা ও দুপুরের খাবার প্যাকেটের সঙ্গে কোনো পানি দেওয়া হয়নি। যারা আমাদের টাকা আত্মসাৎ করেছেন তাদের বিচার চাই।’
কালিহাতী নবাব বিরিয়ানি হাউজে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, কালিহাতী পাট অধিদপ্তর থেকে মোরগ পোলাও নেওয়া হয়েছে। যার প্রতি প্যাকেটের দাম পড়েছে ১৫০ টাকা করে।
জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম সিদ্দিকী বলেন, আমি কোনো খাবার আনিনি। খাবারসহ বরাদ্দের সব টাকা উপ-সহকারীর কাছে দিয়েছি। তবে খাবারের ৩৮০ টাকা থেকে আয়কর ও ভ্যাটের জন্য ২০ শতাংশ বাদ যাবে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি আরও বলেন, সকালের নাশতার জন্য ৬০ টাকা এবং দুপুরের মোরগ পোলাওয়ের জন্য ২২০ টাকার খরচ হয়েছে বলে আমাকে জানানো হয়েছে।
কালিহাতী উপজেলার উপ-সহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা ফারুকুজ্জামান বরাদ্দের টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম সিদ্দিকী আমাদের অফিসের কম্পিউটারের অপারেটর দিয়ে সব কিছু করিয়েছেন।
কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম বলেন, উনাদের আগামীকাল অফিসে আসতে বলা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।