নাগরপুরের ফাতেমা আক্তারের দুটি কিডনি নষ্ট: স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায়!

নাগরপুর ফিচার স্বাস্থ্য

নাগরপুর প্রতিনিধি: নাগরপুরের ফাতেমা আক্তারের দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। গত এক বছর ধরে তিনি জটিল এ রোগে আক্রান্ত হয়ে অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না পরিবার। এতে দিনদিন তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে পরিবারের হাল ধরতে চান মাস্টার্স পাশ ফাতেমা।

ফাতেমা আক্তার নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়নের জালাই গ্রামের রহম শেখের মেয়ে। গত বছর টাঙ্গাইল শহরের এম এম আলী কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন তিনি। স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছেন। নিজের লেখাপড়ার খরচ বহন করতেন টিউশন করে। মেধাবী ফাতেমার ইচ্ছে ছিল ভালো একটা চাকরি করে অভাবের সংসারের হাল ধরবেন। স্নাতকোত্তর শেষ করে চাকরি খুঁজতে থাকেন। এর মাঝেই দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে যায় তার।

পরিবারের সদস্যরা বলেন, ২০২০ সাল থেকে ফাতেমা অসুস্থবোধ করতে থাকেন। প্রথমে একাধিক চিকিৎসকের কাছে গেলেও সঠিক রোগ নির্ণয় হয়নি। পরে বাতজ্বর রোগে আক্রান্ত জানিয়ে চিকিৎসাপত্র দেন চিকিৎসক। কিন্তু এতে অসুস্থতা কমেনি। ধীরে ধীরে ফাতেমা আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে গত বছর রমজানে টাঙ্গাইল মেডিকেল হাসপাতালে শারীরিক নানা পরীক্ষার পর ফাতেমার কিডনি নষ্ট হওয়ার বিষয়টি জানা যায়। পরে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে গিয়েও কিডনি নষ্টের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।

পরিবারের সদস্যরা জানান, চিকিৎসরা জানিয়েছেন ফাতেমার দুটি কিডনির চিকিৎসা করাতে ৫০ লাখ টাকার প্রয়োজন। কিন্তু দরিদ্র পরিবারের পক্ষে চিকিৎসার খরচ বহন করা সম্ভব নয়। ফাতেমার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করার পর তাদের সংসারের কোনো ব্যয়ভার বহন করেননি। ফাতেমার মা গৃহিনী। এ অবস্থায় ফাতেমার বড় ভাইয়ের ওপর সংসারের দায়িত্ব পড়ে। ঢাকার একটি বেসরকারি হাইস্কুলের দপ্তরি পদে চাকরি করেন তিনি। তার পক্ষে পরিবারের খরচ চালানোই কষ্টসাধ্য। এর মধ্যে ফাতেমার চিকিৎসা খরচ জোগানো তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে উঠেছে।

তার প্রতিবেশিরা বলেন, ফাতেমা খুবই মেধাবী শিক্ষার্থী। তার দুটি কিডনি নষ্ট হওয়ার খবর শুনে আমরা মর্মাহত। তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। কিন্ত দরিদ্র পরিবারের পক্ষে এই টাকার ব্যবস্থা করা সম্ভব না। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে মেধাবী এই শিক্ষার্থীর আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন।

ফাতেমার মা হাসিনা বেগম বলেন, ফাতেমা চিকিৎসার জন্য প্রতিমাসে প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার ওষুধ লাগে। এই টাকা আমাদের পক্ষ থেকে জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না। টাকা অভাবে মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারছি না। সকলের কাছে মেয়ের চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদন করছি।

ফাতেমা আক্তার বলেন, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন আমার দুটি কিডনি ধীরে ধীরে আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে। চিকিৎসা করাতে ৫০ লাখ টাকা লাগবে। আমাদের পক্ষে এত টাকা দিয়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব না। আমি বাঁচতে চাই। আগের মতো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই। তাই সরকারসহ সবার কাছে সাহায্যের আবেদন করছি।

নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজ সিদ্দিকী বলেন, ফাতেমা আক্তারের দুটি কিডনির চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। এই বিপুল অর্থ আমাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *