
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে দ্বিতীয় শ্রেণির এক মাদ্রাসাছাত্রীকে (১০) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় মাতবরেরা গ্রাম্য সালিসে ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার শিশুর পরিবারকে ৯২ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে আজ শনিবার ওই শিশু ও তার মাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মির্জাপুর থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এলাকাবাসী ও শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা যায়, শিশুটির বাবা প্রবাসী। সম্প্রতি ওই শিশু তার নানির বাড়িতে বেড়াতে যায়।
ঘটনার দিন কুড়িপাড়া গ্রামের নওশের মিয়ার ছেলে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক ফিরোজ মিয়া (৪৫) তাঁদের জমিতে সার দিচ্ছিলেন। এ সময় পাশেই শিশুটি গাছ থেকে বরই পাড়ছিল। ফিরোজ শিশুটিকে ফুসলিয়ে পাশের একটি শৌচাগারে নিয়ে ধর্ষণ করেন। একই সঙ্গে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করেন। ধর্ষণের কথা কাউকে বললে শিশুটিকে মেরে ফেলার হুমকি দেন ফিরোজ। সেখান থেকে শিশুটি বাড়ি ফেরার পর চুপচাপ হয়ে যায়। তাকে পরিবারের সদস্যরা নীরব থাকার কারণ নানাভাবে জানতে চান; কিন্তু সে কিছু না বলায় তাঁদের সন্দেহ হয়। অনেক চেষ্টার পর শিশুটি তার মাকে ঘটনার বিস্তারিত জানান।
পরে ঘটনাটি প্রতিবেশীদের মধে৵ জানাজানি হয়। এদিকে, ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ঘটনার এক সপ্তাহ পর কয়েকজন গ্রাম্য মাতবর সালিসের আয়োজন করেন। সালিসে ফিরোজকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সালিসকারীদের চাপের কারণে শিশুটির মা ‘বিচার’ মানতে বাধ্য হন। জরিমানার টাকার মধ্যে ৯২ হাজার টাকা তাঁকে দেওয়া হয়েছে বলে শিশুটির মা জানিয়েছেন।
অপর দিকে ঘটনার খবর পেয়ে অভিযুক্ত ফিরোজ মিয়াকে আটক করতে অভিযান শুরু করে মির্জাপুর থানা-পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ব্যর্থ হয়। আজ ওই শিশু ও তার মাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মির্জাপুর থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোশারফ হোসেন জানান, শিশুটিকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্ত ফিরোজকে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।