সখীপুরে শহীদ দিবসে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পেলেন সাড়ে তিন হাজার রোগী

ইতিহাস ও ঐতিহ্য সখিপুর সংগঠন স্বাস্থ্য

সখীপুর প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার হাতীবান্ধা ইউনিয়নের তালিমঘরে ২১ বছর ধরে রাজধানী শহর থেকে গ্রামে গিয়ে বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছে কিডনি অ্যাওয়ারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস)। প্রতি বছর এ প্রতিষ্ঠানটি একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদদের স্মরণে সখীপুর, বাসাইল উপজেলাসহ আশপাশের গ্রামাঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত রোগীদের সেবা দিয়ে আসছে।

 

জানা যায়, এবার এ মেডিকেল ক্যাম্পে ১০ দিন আগেই সাড়ে তিন হাজার রোগী নিবন্ধন করেন। প্রাথমিক রোগ নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসকের কাছে আসার আগেই রোগীদের বিনা মূল্যে রক্ত, প্রস্রাব, ইসিজি আলট্রাসনোগ্রাম, এক্স-রেসহ নানা পরীক্ষাও করানো হয়েছে। রাজধানী ঢাকা শহর থেকে অর্ধশত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সকাল ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত তালিমঘরের ওই ক্যাম্পে এসব রোগীকে চিকিৎসা দেন। বিকেলে চক্ষু শিবির থেকে ২৫০ জন রোগীকে চোখের অস্ত্রোপচার (ছানি অপারেশন) করার জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে তাঁদের বাসে করে রাজধানী ঢাকায় নেওয়া হবে।

বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পাশাপাশি ওই স্থানে ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সুস্থ জীবন ধারা’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভা হয়। এ ছাড়া ক্যাম্পসের প্রকাশনা ‘প্রয়াস ২১’–এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। আলোচনা সভায় কিডনি রোগ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন কিডনি বিষয়ক বিশিষ্ট চিকিৎসক ক্যাম্পসের সভাপতি অধ্যাপক এম এ সামাদ।
আলোচনায় অংশ নেন কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ মো. আবদুল হালিম, ক্যাম্পসের নির্বাহী পরিচালক রেজওয়ান সালিহীন।

উপস্থিত ছিলেন সোনালী ব্যাংক পিএলসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শওকত আলী খান, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আলতাফ উল আলম, বেসরকারি সংস্থা প্রশিকার চেয়ারম্যান রোকেয়া ইসলাম, প্রশিকার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন, পরিবহন অডিট অধিদপ্তরের পরিচালক আমিনুল এহসান কবির, সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল রনি, সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন প্রমুখ।

বেলা ১১টার দিকে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, মাঠজুড়ে বড় আকারের দুটি তাঁবু করা হয়েছে। কিডনি, মেডিসিন, গাইনি, চক্ষু, ইউরোলজি, নিউরোলজিসহ ১৫টি বুথে লাইন ধরে রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। স্থানীয় স্কাউটের সদস্যরা রোগীদের সুশৃঙ্খলভাবে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিটি বুথে চারজন আবার কোনো বুথে দুজন চিকিৎসক রোগী দেখছেন।

কিডনি রোগবিশেষজ্ঞ ওই চিকিৎসক ও ক্যাম্পসের সভাপতি অধ্যাপক এম এ সামাদ বলেন, গত ২১ বছরে চোখে অস্ত্রোপচারসহ লাখখানেক রোগীকে বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। আমার বাড়ি সখীপুর উপজেলার হাতীবান্ধা ইউনিয়নে হওয়ায় আমি চিকিৎসাসেবা দিতে আমার এলাকার সুবিধাবঞ্চিত মানুষদেরই বেছে নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, কিডনি রোগ দিন দিন বেড়েই চলছে। এই দেশে ৩ কোটি ৮০ লাখ লোক কিডনি রোগে আক্রান্ত। এ রোগের চিকিৎসার ব্যয় বেশি। তাই এই রোগ থেকে বাঁচতে সচেতন হতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম পরিমিত খাবার, পর্যাপ্ত পানি পান করা, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, মাদক- ধূমপান পরিহার করা এবং সময়মতো চেকআপ করে এ রোগ থেকে বাঁচা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *