নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল শহরের বেড়াবুচনা বৌ-বাজার এলাকার ওএমএস ডিলার রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দের চাল, আটা বাজারে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, চাল ও আটাসহ কিছু পণ্য ওএমএসের ডিলারদের মাধ্যমে কমদামে বিক্রি করে থাকে। এ পণ্য ডিলারের বাজারে বিক্রির সুযোগ না থাকলেও অভিযোগ রয়েছে, খাদ্য বিভাগের কর্মচারীদের সহযোগিতায় রফিকুল ইসলাম স্থানীয়দের সরকার নির্ধারিত দামে চাল, আটা না দিয়ে অতিরিক্ত দামে বাজারে বিক্রি করে থাকেন। ওএমএসের ব্যবহৃত খালি বস্তা কেনার আড়ালে ডিলারের কাছ থেকে চাল, আটা কেনার অভিযোগ রয়েছে কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা এলাকার লাভলী বেগমের বিরুদ্ধে।
সোমবার, ২০ জানুয়ারি বিকেল ৩টায় বেড়াবুচনা বৌ-বাজারে রফিকুলের বিক্রয় কেন্দ্র থেকে অটোরিকশায় ওএমএসের আট বস্তা চাল ও এক বস্তা আটা তুলতে দেখা যায়। রফিকুল ইসলামের কর্মচারী মেরাজ মিয়া বলেন, লাভলী বেগম নামে ওই নারী খালি বস্তা কেনার পাশাপাশি চাল, আটাও কেনেন।
পাশের মনোহারী দোকানে আসা হাবিবুল্লাহ বলেন, আমরা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও চাল, আটা পাই না। তবে রফিকুল ইসলাম বিভিন্নভাবে বাজারে চাল, আটা বিক্রি করে থাকেন। খাদ্য অফিসের যারা দায়িত্বে থাকেন, তাদেরও চোখ বন্ধ থাকে।
সাংবাদিকদের উপস্থিতির টের পেয়ে লাভলী বেগম অটোরিকশা থেকে সটকে পড়েন। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অটোরিকশার চালক রিফাত শান্তিকুঞ্জ মোড় হয়ে ঘুর পথে লাভলী বেগমকে তুলে নিয়ে কালিহাতীর এলেঙ্গা কলেজ মোড় এলাকার বহুতল ভবনের নিচে গিয়ে থামেন। সেখানে লাভলী বেগম তারা কাকা শহিদুল ইসলামের কাছে চাল, আটা ও খালি বস্তা দেন। লাভলী বেগম খালি বস্তার আড়ালে চাল, আটা কেনার কথা প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করেন এবং সংবাদকর্মীদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে বেড়াবুচনা বৌ-বাজার এলাকার ওএমএস ডিলার রফিকুল ইসলামের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে তার মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।
রফিকুল ইসলামের বিক্রয় কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা খাদ্য পরিদর্শক সুজয় কর্মকার বলেন, আমি সোমবার, ২০ জানুয়ারি রফিকুল ইসলামের বিক্রয় কেন্দ্রে ছিলাম না। অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলাম। তবে সেখানে আমাদের অফিসের দারোয়ান মো. জিয়া দায়িত্বে ছিলেন।
অফিসের দারোয়ান মো. জিয়া বলেন, সকাল ৯টা হতে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও আমি সোমবার দুপুর দেড়টায় চলে আসি। তখন রফিকুলের বিক্রয় কেন্দ্রে ১৩৩০ কেজি চাল ছিল। আমি আসার পরে বাজারে চাল বিক্রি করছে কি-না সেটা আমি জানি না।
টাঙ্গাইল জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ তানভীর হোসেন জানান, রফিকুল ইসলামের বাজারে চাল বিক্রি করার বিষয়টি তার জানা নেই। সেখানে যারা দায়িত্ব ছিলেন, তাদের সঙ্গে কথা বলে জানাতে পারবেন। তবে এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।