ঘাটাইল প্রতিনিধি: ঘাটাইল উপজেলায় সংরক্ষিত বনের জমিতে অবৈধভাবে দালান নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে। অবৈধভাবে দালান নির্মাণ বিষয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বন বিভাগের কর্মকর্তারা পরবর্তীতে সেই দালান ভেঙে গুঁড়িয়ে দিলেও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দালানটির নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন সৌদি প্রবাসী কবির হোসেনের স্ত্রী তাসলিমা আকতার।
স্থানীয়রা বলছেন, বন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে প্রকাশ্যে নির্মিত হচ্ছে এসব স্থাপনা। সম্প্রতি ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া ইউনিয়নের শহর গোপিনপুর এলাকার দিঘালিয়া চালা গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে বনের ভূমি বেদখল করে দালান নির্মাণের এমন চিত্র দেখা গেছে।
টাঙ্গাইল বন বিভাগের জরিপ অনুযায়ী, ঘাটাইল উপজেলায় বনভূমির পরিমাণ ২৫ হাজার ৭৮৫ একর। এর মধ্যে বেদখল হয়ে গেছে প্রায় এক হাজার ৯শ একর বনভূমি। এতে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ।
জানা যায়, ধলাপাড়া ইউনিয়নের শহর গোপিনপুর এলাকার দিঘালিয়া চালা গ্রামের মৃত হায়দার আলীর ছেলে কবির হোসেন বনের ৭৬২ দাগে প্রায় ৩০ শতক জমি বেদখল করে অবৈধভাবে স্থায়ী পাকা দালাল নির্মাণ করছেন। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি পত্র পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার তিন দিন পর ওই পাকা দালানটি অতিরিক্ত জনবল নিয়ে গিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেয় বন বিভাগের কর্মকর্তারা। কিন্তু অবাক করার বিষয় হচ্ছে, কবির হোসেনের স্ত্রী তাসলিমা আকতার আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সেই পাকা স্থায়ী দালানটির পুনরায় নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখে সম্প্রতি এর ছাদ ঢালাই কার্য সম্পাদন করেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বন কর্তৃপক্ষর সাথে অবৈধভাবে সমঝোতার মাধ্যমে বন বিভাগের মুল্যবান জমি বেদখল করে চাষাবাদ থেকে শুরু করে স্থায়ী দালান নির্মাণ করলেও কোন সমস্যা হয় না। কিন্তু তাদের সাথে সমঝোতা না করে বনের জমিতে ইঁদুর পর্যন্ত ঢুকতে পারে না। ফলে অনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমেই সংরক্ষিত বনের ভূমি বেদখল করে একের পর এক গড়ে উঠছে পাকা দালান ও অসংখ্য ঘরবাড়ি।
শহর গোপিনপুর গ্রামের আব্দুল ছামাদ (৫৫) জানান, বন বিভাগের লোকজন কত বড় দূর্নীতিবাজ হলে ভেঙে দেয়া দালান পূনরায় নির্মাণ করে সেটি গবেষণার দাবি রাখে।
কবির হোসেন স্ত্রী তাসলিমা আকতার বলেন, এই জমি সংক্রান্ত আমাদের কোন কাগজপত্র নাই। এটির মালিকানা সরকারের এ কথা সত্যি, তবে আমার মতো আশেপাশে আরও অনেকেই ইটের ঘরবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছে। তা ছাড়াও আমরা এই জমি দীর্ঘদিন যাবৎ ভোগ দখল করে আসছি।
ধলাপাড়া সদর বন বিটের বিট কর্মকর্তা আব্দুল কদ্দুুস জানান, প্রবাসী কবির হোসেনের স্ত্রী তাসলিমা আকতারকে বনের জমিতে ঘরের নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বারবার নিষেধ করলেও তারা নির্দেশনা অমান্য করায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছি। পরবর্তীতে জনবল নিয়ে গিয়ে দালানটি ভেঙেও দিয়েছি। তারপরেও তারা ওই দালানটির নির্মাণ কাজ কিভাবে অব্যাহত রেখেছেন বিষয়টি আমার জানা নেই।
ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা ওয়াদুদুর রহমান বনের জমিতে অবৈধভাবে নির্মিত দালান ভেঙে দেয়ার পর জবরদখলকারী পুনরায় কিভাবে দালান নির্মাণ করে জানতে চাইলে বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। এখন জানলাম, ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়ে বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি, দেখি কি করা যায়।