নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনায় সাগরদিঘী ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. হাবিবুল্লাহ্ বাহারকে গ্রেপ্তার করেছে টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশ।
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর রাতে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত মো. হাবিবুল্লাহ্ বাহার ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
জানা যায়, ৫ আগস্ট ২০২৪ পূর্ববর্তী সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনায় পার্শ্ববর্তী মধুপুর থানায় গত ২ অক্টোবর হাবিবুল্লাহর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর হাবিবুল্লাহকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হলে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।
সাগরদিঘী এলাকাবাসী জানায়, ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ্ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক। এদিকে গত ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর তাকে লেবাস পাল্টিয়ে জামায়াতে ইসলামীর কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। কিন্তু ঘাটাইল উপজেলা জামায়াতের আমির মো. রাসেল মিয়া জানালেন, হাবিবুল্লাহ্ তাদের দলের কেউ নন এবং তাদের দলের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
স্থানীয়রা আরও জানায়, হাবিবুল্লাহ্ শুধু সাগরদিঘীতে নয়, পুরো ঘাটাইল উপজেলাতেই বিতর্কিত। আওয়ামী লীগের প্রভাবে বিভিন্ন সময় অসংযত আচরণের জন্য সমালোচিত তিনি। তার বিরুদ্ধে বন কর্মকর্তাকে গালিগালাজ, সাংবাদিককে হুমকি এবং সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগে গণমাধ্যমে নানান সময়ে বিভিন্ন প্রতিবেদনও প্রকাশ পেয়েছে।
চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ্ বাহার গ্রেপ্তার হওয়ায় তার নিজ এলাকা সাগরদিঘীতে এলাকাবাসী আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে। এছাড়া ঘাটাইল কলেজ মোড় এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর রাতে টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশের একটি দল ঘাটাইল থানা পুলিশের সহযোগিতায় হাবিবুল্লাহর নিজ বাড়ি সাগরদিঘীর হাতিমারা গ্রামে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ফেসবুক লাইভে আসেন তিনি। এরপর ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে মধুপুর থানায় নিয়ে যায়।
ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ রকিবুল ইসলাম বলেন, টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশের একটি দল চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহকে গ্রেপ্তার করতে ঘাটাইল থানা পুলিশের সহযোগিতা চায়। থানা পুলিশের সহযোগিতায় শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। মধুপুরের একটি মামলায় আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।