বীর মুক্তিযোদ্ধা বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ফজলুর রহমান খান ফারুক ইন্তেকাল করেছেন

ইতিহাস ও ঐতিহ্য টাঙ্গাইল সদর রাজনীতি শোক সংবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ফজলুর রহমান খান ফারুক (৮০) ইন্তেকাল করেছেন। শনিবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে নিজ বাসভবনে শহরের থানাপাড়ায় তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

 

বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক গণপরিষদ সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ফজলুর রহমান খান ফারুক দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। পরে শনিবার সকালে তার কোন সাড়া শব্দ না পেলে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ফজলুর রহমান খান ফারুক ১২ অক্টোবর ১৯৪৪ সালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ওয়ার্শী ইউনিয়নের কহেলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্স পাস করেন। তিনি ১৯৬০ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৬২ সালে টাঙ্গাইল মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ৬৫ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন।

তিনি ১৯৭০ সালের গণ পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ৬ দফা আন্দোলন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণসহ তৎকালীন সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে টাঙ্গাইল-৭ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৪ সালে বাকশাল গঠিত হলে টাঙ্গাইল জেলা বাকশাল এর যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৮৪ সাল থেকে ২০১৫ সালের ১৭ আক্টাবর পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০১৭ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার তাকে ২০২১ সালে একুশে পদক প্রদান করেন।

তিনি সাম্প্রতিক সময়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি মামলায় প্রধান আসামি ছিলেন। তার স্ত্রী মৃত সুরাইয়া বেগম। তিনি এক পুত্র এবং এক কন্যা সন্তানের জনক। তার পুত্র খান আহমেদ শুভ টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। আজ বাদ আসর টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থান জামে মসজিদে তার জানাযা অনুষ্ঠিত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *