সখীপুরে পাগলা কুকুরের কামড়ে আহত ২০ জন হাসপাতালে ভর্তি

দুর্ঘটনা সখিপুর স্বাস্থ্য

সখীপুর প্রতিনিধি: সখীপুর উপজেলায় পাগলা কুকুরের কামড়ে শিশু, মহিলা, বৃদ্ধ, বনপ্রহরীসহ ২২ জন আহত হয়ে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে এসেছেন। তাদের মধ্যে ১৬ জনকে রাজধানী ঢাকার মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কুকুরের আক্রমণের শিকার ৭ বছরের শিশু থেকে ৫৬ বছরের বৃদ্ধ আছেন। তাদের হাত, পা, মুখসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম হয়েছে।

 

শনিবার বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার কালমেঘা, ঢাকুরিয়া ও বাটাজোর গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় কুকুরটি আক্রমণ করে। কালমেঘা গ্রামেই ১৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এতে ওই গ্রামে কুকুরের আতঙ্ক তৈরি হয়।

ঢাকায় পাঠানো রোগীরা হলেন কালমেঘা গ্রামের সিদ্দিক হোসেনের স্ত্রী শরিফা (৪০), আবুল কাশেমের ছেলে আলিমুল (২৮), ইয়াসিন আলীর স্ত্রী ইসমত আরা (৩৬), আসির উদ্দিনের স্ত্রী জরিনা আক্তার (৩০), নজরুল ইসলামের স্ত্রী হেনা আক্তার (৫২), জামাল হোসেনের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৪০), সাইফুল ইসলামের স্ত্রী পারুল আক্তার (৪৫), চান মিয়ার ছেলে জুনায়েদ হাসান (৭), জলিল মিয়ার ছেলে সুবেল মিয়া (২৫), আবু হানিফের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৩০), আবদুল খালেকের স্ত্রী নাজমা বেগম (৫৫)।

এ ছাড়া ঢাকুরিয়া গ্রামের আজাহারের ছেলে সালমান (২৬), উপজেলার কড়ইচালা বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম (৫৬) ও বাটাজোর গ্রামের শাহেদ মিয়ার স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম (৪৫) কুকুরের আক্রমণের শিকার। এর বাইরে রাব্বি, ইসহাক, সজীব, আবু তালেব, আঞ্জুমান ও আবু হানিফকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

কালমেঘা গ্রামের রাব্বি বলেন, কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই কুকুরটি দৌড়ে এসে তার হাতে কামড় দেয়। তখন কোনমতে কুকুরকে শরীর থেকে সরিয়ে দৌড়ে পালাই।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, আজ হাসপাতালে একসঙ্গে অনেক আহত রোগী এসেছেন। তারা সবাই কুকুরের কামড় খেয়ে আসেন। সাধারণত তারা এমন বীভৎসভাবে কামড় দেওয়া রোগী দেখেন না। কুকুর কারও হাতে, কারও পায়ে আবার কারও মুখে কামড় দিয়েছে।

জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুরাইয়া জেবীন মৌসুমী বলেন, আজ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ২০ জন কুকুরের কামড় খেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। হাসপাতালে ভ্যাকসিন না থাকায় আহত রোগীদের ঢাকার মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সামান্য আহতদের ওষুধের দোকান থেকে ভ্যাকসিন এনে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, কয়েক দিন আগে কুকুরের কামড়ের ভ্যাকসিন ফুরিয়ে গেছে। বিষয়টি তখনই সংশ্লিষ্ট বিভাগে চাহিদা দেওয়া হয়েছে।

সখীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, দুপুর ২টার পর থেকে কুকুরের আক্রমণে আহত রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসে। যাদের শরীরে আঘাত বা ক্ষত খুব বেশি বা গভীর ক্ষত তাদেরকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অন্যান্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে কুকুড়ের কামড়ের কোন ভ্যাকসিন নাই, চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *