কালিহাতীতে যমুনা নদীর বালুর ঘাটে আধিপত্যের সংঘর্ষ: গাড়িতে অগ্নিসংযোগ

অপরাধ কালিহাতী দুর্ঘটনা পরিবেশ

কালিহাতী প্রতিনিধি: কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের লুহুরিয়া বালুর ঘাটে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে তালুকদার পরিবারের দুই ভাইয়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন এবং একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

 

সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, ২১ শনিবার, সেপ্টেম্বর রাত ৮ টার দিকে কালিহাতী উপজেলায় গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা হজরত আলী তালুকদার এবং তার ভাই আলম তালুকদারের সমর্থকদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সময় এক পর্যায়ে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা হজরত তালুকদারের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, ফলে গাড়িটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। এ সময় গুরুতর আহত বাবুল তালুকদারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লুহুরিয়া বালুর ঘাট দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে অবৈধভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। তালুকদার পরিবারের প্রভাবশালী সদস্যদের নেতৃত্বে এখানে কোটি কোটি টাকার বালু উত্তোলন ও বিক্রি করা হয়। সরকারিভাবে ইজারা ছাড়াই বালু উত্তোলনের এ ব্যবসা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ক্ষমতাসীন দলের আশ্রয়ে নির্বিঘ্নে চলতে থাকে। সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে তালুকদার পরিবারের ভেতরে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে।

তালুকদার পরিবারের বড় ভাই হজরত আলী দীর্ঘদিন ধরে বালুর ঘাটের নিয়ন্ত্রণে ছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ছোট ভাই আলম তালুকদার তার সমর্থন বাড়াতে শুরু করেন। এর ফলে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করে, যা শেষ পর্যন্ত সহিংস সংঘর্ষে রূপ নেয়।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী তালুকদারকে মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। হযরত তালুকদার বলেন, আমি দুরে আছি বিস্তারিত ফোনে বলা যাবে না বলে ফোনটি কেটে দেয়। এছাড়া, আলম তালুকদার বলেন আমি গাড়ী আছি নেমে আমি ফোন বেক করবো।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বালুর ঘাট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের এই ক্ষমতার লড়াই সাধারণ মানুষের জন্যও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপের পরও অনেকেই শঙ্কিত যে, এ ধরনের সংঘর্ষ আবারও ঘটতে পারে, যদি স্থায়ী কোনো সমাধান না আসে। তবে সংঘর্ষের খবর পেয়ে কালিহাতী থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ লুহুরিয়া বালুরসহ সকল ঘাটগুলো বন্ধ করে দিয়েছে এবং তদন্ত শুরু করেছে।

কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম ভূঁইয়া বলেন, রোববার ঘটনাস্থল গিয়ে বালুর ঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তবে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *