নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, এমন রাজনীতি করলেন আপনাকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হলো। ৮৫০ বছর আগে লক্ষ্মণ সেন পালিয়ে গিয়েছিল। অবশেষে পালিয়ে গেলেন আপনি।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলের ১৭টা বছরের প্রতিটা রাত ছিলো কালো রাত, মানুষ ছিলো বন্দি কারাগারে, কেউ মন খুলে কথা বলতে পারেনি শেখ হাসিনার জন্য।
টাঙ্গাইল শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টার দিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের মাগফেরাত কামনা, আহত এবং শহীদ পরিবারের সাথে মত বিনিময় ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, টানা ১৭ বছর মানুষ ছিলো বন্দি, কেউ কথা বলতে পারে নাই, ভিক্ষুকদেরও চাঁদা দিতে হতো, ৩০ টাকার পেঁয়াজ ৩শ টাকা দিয়ে কিনতে হতো, বাবা ছেলে দুজন এক সাথে খাবার খাচ্ছে, সে সময় ছেলেকে তুলে নেওয়া হতো। বিদেশে বসে সাংবাদিকরা প্রতিবাদ করলে, তার পরিবারের সদস্যদের উপর অত্যাচার চালানো হয়েছে। এই ১৭ বছর মানুষের জন্য প্রতিটা রাত ছিলো কালো রাত।
আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৭ বছরে দেশের ১৫ কোটি মানুষ ছিল মজলুম উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এ জাতি বন্দিত্বের নিকট বাধা ছিল। মুখে ছিল তালা, হাতে হ্যান্ডকাপ, পায়ে ছিল বেড়ি। প্রত্যেকটি মানুষই ছিলো জুলুমের শিকার।
জামায়াত আমীর আরও বলেছেন, তারা বিডিআর হত্যা করেছে, হত্যা করে ড্রেনে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনীদেরকে কাজ করতে দেওয়া হয়নি, অনেক যুবককে দেখেছি বিয়ে করে জেলে গিয়েছে তারপর আর ফিরে আসেনি। এ দেশের শত্রুরা জানে জামায়াত ইসলামী ভাঙবে তবু মচকাবে না। জামায়াতের সিনিয়র নেতাদেরকে তারা সাজানো মামলা দিয়ে শীর্ষস্থানীয় ১১ জন নেতাকে তারা হত্যা করেছে।
অনুষ্ঠানে টাঙ্গাইল জেলা আমীর আহসান হাবীব মাসুদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ড. মাও. খলিলুর রহমান মাদানী।
বক্তারা বলেন, আমাদের জেলে ভরে মনে করেছিলেন ৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন, কোথায় ৪১ সাল? ২৪ পর্যন্ত পার করতে পারলেন না? কোথায় পালিয়ে গেলেন? আপনারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে। তার বাবা তিন বছর থাকতে পারে নাই আর শেখ হাসিনা তিন দিনও থাকতে পারেনি। পালিয়ে গেছে ভারতে, আমরা আপনাকে ভয় পায়নি। এই কয় বছর আমরা দ্বিগুণ হয়েছি।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন ধনবাড়ীর নিহত একরামুল হক সাজিদের বাবা জিয়াউল হক, নিহত আশরাফুলের বোন সৈয়দা আক্তার, জেলা বৈষম্য ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মনিরুল ইসলাম, জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মতিউল্লাহ, শহর শিবির সভাপতি মামুন আব্দুল্লাহ প্রমুখ।