মধুপুরের দোখলা-মমিনপুর কাঁচা সড়কের বেহাল অবস্থা!

দুর্ঘটনা পরিবেশ মধুপুর

মধুপুর প্রতিনিধি: মধুপুর উপজেলার দোখলা-মমিনপুর সড়কের দোখলা থেকে নয়নপুর হয়ে ধরাটি কোনাবাড়ি পর্যন্ত কাঁচা রাস্তার বেহাল অবস্থা বলে জানা গেছে। উপজেলা এলজিইডি অফিস দোখলা অংশে কিছুটা হেরিজবন্ড করা হয়েছে বলে জানালেও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি সড়কটি পাকাকরণের।

 

উপজেলার কয়েকটি কৃষি এলাকার মধ্যে দোখলা সাইনামারি নয়নপুর জালিচিরাসহ আশপাশের এলাকাও অন্যতম। এ গ্রামগুলো যাতায়াতের প্রধান এ সড়কটি লাল মাটির এলাকা থাকার কারণে বৃষ্টি হলেই মাটি গলে কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে। তখন হেঁটে কিংবা বাহনে যাতায়াত করা কষ্টকর হয়ে যায়।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সড়কটি নয়নপুর পর্যন্ত কুড়াগাছা ও ফুলবাগচালা দুই ইউনিয়নের মধ্যে পড়েছে। স্থানীয় বেশির ভাগ গারো কোচ বসতির পুরোটাই কৃষি এলাকা। এখানে আনারস, কলা, আদা, হলুদ, পেঁপেসহ অন্যান্য ফসল চাষের উর্বর এলাকায় প্রচুর পরিমানে কৃষি পণ্য চাষ হয়। যা সারাদেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে। সারা বছরই কৃষকদের সার, কীটনাশক, চারাসহ উৎপাদিত পণ্য আনা-নেওয়া করা হয় এ সড়ক দিয়ে। সড়কটি কাঁচা থাকার কারণে বর্ষাকালে কষ্টের মাত্রা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় ফসলের ন্যায্য দাম পান না বলে জানালেন কৃষকরা। সড়কটি পাকা হলে জনদূর্ভোগ কমবে, কৃষকরা পাবে ফসলের ন্যায্যমূল্য, সময় অপচয় রোধসহ নানা সুবিধা ভোগ করতে পারবেন তারা। আর এজন্য সড়কটি পাকাকরণের দাবি তাদের।

অটোবাইক চালক ওসমান গনি জানান- সাইনামারি, নয়নপুর, জালিচিরা থেকে আনারস কল ভর্তি করে আসতে বিকেল হয়ে যায়। বৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে লাল মাটি গলে দইয়ের মত হয়ে যায়। গাড়ির চাকায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। কয়েক মাস চলতে চলতে গর্তগুলো বড় হয়ে খানাখন্দ হয়। তখন বাহন নিয়ে চলাচল করতে সীমাহীন কষ্ট পোহাতে হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা ফরমান আলী বলেন, বর্ষাকালে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা একে বারেই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। মোটর সাইকেল, অটোবাইক নিয়ে চলাচল করতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় কয়েক মাস। শুকনো মৌসুমে ধূলি-বালি থাকে তখনও কষ্ট করে চলাচল করে এ এলাকার মানুষেরা।

ট্রাক ড্রাইভার্স ইউনিয়ন দোখলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কালাম আজাদ মিঠু বলেন, দোখলা থেকে পশ্চিম দিকে নয়নপুর, সাইনামারি, জালিচিরা, থানারবাইদের দক্ষিণ এলাকাসহ বিশাল এলাকায় কলা, আনারস, পেঁপে, আদা, হলুদসহ নানা কৃষি ফসল চাষ হয়ে থাকে। এ এলাকা মূলত কৃষি এলাকা। সারা বছর কাঁচামাল, সার, বিষসহ কৃষি উৎপাদন উপকরণ বহন করা হয়। তার মতে, বর্ষাকালে কৃষি ব্যবসায়ীদের কষ্ট বেড়ে যায়। বর্ষাকাল আনারস বাজারে নিতে প্রতিপিচ দুই টাকা খরচ পড়ে যায়। আর পাকা হলে সেখানে পঞ্চাশ পয়সা হবে। তাদের শাখা থেকে সারা বছর ৫-৭ টি আর মৌসুমের সময় ৫০ টির মতো ট্রাক লোড হয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়। তিনি সড়কটি পাকাকরণের দাবি জানান।

সাইনামারি গ্রামের বিজয় বর্মন বলেন, দোখলা থেকে সাইনামারি পর্যন্ত ইট ফালানো আছে। ইটগুলো উঁচু নিচু হয়ে পড়েছে। গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কৃষি ফসল নেয়ার জন্য অটোবাইক কষ্ট করে চললেও ভ্যান চলা দায়। তিনি জানান, নয়নপুরের দিকে কাঁচা সড়ক বেশি বেহাল।

কুড়াগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক সরকার বলেন, এ এলাকাটি কৃষি এলাকা। প্রচুর পরিমানে কলা, আনারস, পেঁপে, আদা, হলুদ পেয়ারা আবাদ হয়ে থাকে। সড়কটির মমিনপুর থেকে কোনাবাড়ি বাজার পাড় হয়ে ফাদার বাড়ি গির্জা পর্যন্ত পাকা হয়ে গেছে। এর চাহিদা দেওয়া আছে। বরাদ্দ আসলে সড়কটি পাকাকরণের কাজ শুরু হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *