মির্জাপুর প্রতিনিধি: মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় এক মাস বন্ধ থাকার পর সরকার পতনের পর একমাস যেতে না যেতেই সেখানে এখন ফাস্টফুডের দোকান হচ্ছে। দোকানের সামনে টাঙানো হয়েছে ‘আর কে ফাস্টফুড অ্যান্ড কফি হাউস’ নামে একটি ব্যানার। আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ফাস্টফুডের দোকান হওয়ার খবরে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সম্প্রতি উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে ‘আর কে ফাস্টফুড অ্যান্ড কফি হাউস’ নামে একটি ব্যানার টাঙানো দেখা যায়। যেখানে লেখা হয়েছে শিগগিরই উদ্বোধন হবে প্রতিষ্ঠানটি। ইতিমধ্যে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত শাটার মেরামত করা হয়েছে।
জানা যায়, স্থানীয় প্রয়াত সংসদ সদস্য একাব্বর হোসেন উপজেলা সদরের কলেজ রোডে তার নিজস্ব স্থানে নির্মিত বিপণি বিতানের একটি কক্ষে প্রায় এক যুগ আগে দলীয় কার্যালয়টি নির্মাণ করেন। বিগত ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর মৃত্যুর পর তার ছেলে ও মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত এটির দেখাশোনা করতেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দুষ্কৃতকারী আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়ে ভিতরে থাকা আসবাবপত্র বাইরে বের করে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। তারপর থেকে কার্যালয়টি বন্ধ ছিল।
এদিকে, মির্জাপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে কলেজছাত্র ইমনের মৃত্যুর ঘটনায় ২২ আগস্ট মির্জাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। এতে স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাহরীম হোসেন সীমান্তসহ ১৫৭ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়। গ্রেপ্তারের ভয়ে দলের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীমান্তর গ্রামের বাসিন্দা মিলন মিয়া ও তার প্রবাসী ভাই অন্তর মিয়া দোকানটি ভাড়া নিয়েছেন। আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয় দোকান হিসেবে ভাড়া নেয়ার বিষয়ে মিলন মিয়া জানান, সীমান্তর মা ঝর্ণা হোসেনের কাছ থেকে তিন বছরের জন্য ঘর ভাড়া নিয়েছেন। এখানে ফাস্টফুডের দোকান দেওয়া হবে। ডেকোরেশনের কাজ চলছে দ্রুত দোকানটি উদ্বোধন করা হবে।
আওয়ামী লীগ নেতা কাদের মিয়া বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অফিসে বসে দলের কাজ করতো। সাময়িক সমস্যার কারণে কার্যালয়ে ফাস্টফুডের দোকান দেওয়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি মেনে নিতে পারছি না।
আত্মগোপনে ও তার মুঠোফোন বন্ধ থাকার কারণে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাহরীম হোসেন সীমান্তর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ বলেন, কোন আলোচনা না করে এভাবে অফিস ভাড়া দেওয়ায় কাজটি ঠিক করেননি।