টাঙ্গাইলে প্রি-ক্যাডেট স্কুলের অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন

টাঙ্গাইল সদর দুর্নীতি মানববন্ধন শিক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল প্রি-ক্যাডেট স্কুলের অধ্যক্ষের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত আনার অভিযোগে পদত্যাগ ও বিচার দাবি করেছে শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠানের অভিভাবকরা।

‘ঘৃণা ও বিক্ষোভ সমাবেশ’ লেখা সম্বলিত ব্যানার নিয়ে মানববন্ধন করতে গেলে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের স্বামী ও তার লোকজন নিয়ে বাঁধা দেয়ার অভিযোগও করেছেন অভিভাবকরা। ১ সেপ্টেম্বর, রবিবার সকালে শহরের জেলা সদর রোডে অবস্থিত প্রি-ক্যাডেট স্কুলে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

 

 

অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে স্কুলের হিজাব পরিহিত ছাত্রীদের নানা বাঁধার মুখে পড়তে হচ্ছে। ছাত্রীরা হিজাব পড়ে প্রবেশ করতে চাইলে তাদেরকে গেটে আটকে দেওয়া হয়। তাছাড়া অধ্যক্ষকের বাহামভুক্ত কতিপয় শিক্ষক প্রতিনিয়ত ছাত্রীদের হিজাব পড়তে নিষেধ করে আসছে।

সম্প্রতি হিজাব পড়াকে কেন্দ্র করে এক অভিভাবকের সাথে ওই অধ্যক্ষের কথা কাটাকাটির বিষয়টি জানাজানির পর অভিভাবকদের মাঝে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এর প্রতিবাদে ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা স্কুলের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তারা টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে ব্যানার নিয়ে মানববন্ধন করতে গেলে অধ্যক্ষের স্বামী হারুণ-অর-রশীদ তার লোকজন নিয়ে বাঁধা দেন। এ সময় তারা ব্যানার ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। এরপর অভিভাবকরা অধ্যক্ষের কার্যালয় ঘেরাও করে রাখেন।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করে চলছেন অধ্যক্ষ শাহানা আক্তার। টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান ফারুকের সাথে সখ্যতা থাকায় ও তার স্বামীর প্রশাসনের সাথে সখ্যতা থাকায় একক আধিপত্য গড়ে তুলেন এবং দাপটের সহিত নানা অনিয়ম করতেন। তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না। স্কুলের নামে দোকান ভাড়া, ১৫’শ শিক্ষার্থীর বেতন, পরীক্ষা ফিসহ লাখ-লাখ টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন। এছাড়াও ওই অধ্যক্ষের বয়সসীমা পার হলেও এ পদে বহাল তবিয়্যতে রয়েছেন তিনি।

অভিবাবকদের আরো অভিযোগ, ছোট খাটো বিষয় নিয়ে অধ্যক্ষের নিকট জানাতে গেলে প্রায়ই তাদের লাঞ্চিত হতে হয়েছে। স্কুলের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের জন্যে কোন টিফিন টাইম নেই। শিক্ষার্থীরা অনেকটা পালিয়ে পালিয়ে টিফিন করে থাকে।

এছাড়া কোচিং বাণিজ্যসহ সকল বই খাতা-কলমসহ শিক্ষা সরঞ্জাম স্কুল থেকে অনেক বেশি দামে কিনতে বাধ্য করা হয়। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে নানাভাবে হয়রানীর শিকার হতে হয় শিক্ষার্থী ও অভিবাবকদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষকদের অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানোর শর্তে তিনি স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ দিতেন। শিক্ষকরা দিনরাত পরিশ্রম করলেও তাদের সামান্য বেতন দেওয়া হয়। প্রতিবাদ করলে তাদের চাকুরী থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়। এছাড়া, শিক্ষদের সাথে দুর্ব্যবহার করাও ছিলো নিত্যদিনের স্বভাব বলে তারা অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রি-ক্যাডেট স্কুলের অধ্যক্ষ শাহানা আক্তারের নিকট জানতে চাইলে তিনি এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। এছাড়াও স্কুলের শিক্ষার্থীদের হিজাব পড়া নিষিদ্ধ করা হয়নি বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *