টাঙ্গাইল দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

অপরাধ টাঙ্গাইল সদর দুর্নীতি মিডিয়া শিক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার (আলিয়া মাদ্রাসা) ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদে ২২টি অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাঁদের অপসারণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন করেন মাদ্রাসার নির্যাতিত শিক্ষক ও কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

 

 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান। মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আমির কুদরত-ই-এলাহী খান ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সোহরাব হোসেন যোগসাজশ করে দীর্ঘদিন ধরে নজির বিহীন দুর্নীতি, অনিয়ম ও শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থীদের উপর অকথ্য নির্যাতন করে আসছিলো। তারা ইতোমধ্যেই মাদ্রাসায় দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

গত ১৭ আগস্ট (শনিবার) মাদ্রাসার গভর্নিং কমিটির পূর্বনির্ধারিত সভা ছিল। সভায় তাদের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয় উত্থাপিত হওয়ার আশঙ্কায় তাঁরা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের ভাড়া করেন। সভা শুরু হওয়ার পরপরই তাাঁদের নানা ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে কথা উঠলে উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা হঠাৎ মাদ্রাসা ও মাদ্রাসার হোস্টেলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের মারপিট করতে থাকে। এ সময় ছাত্র-জনতা ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সন্ত্রাসীদের হামলায় ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হওয়ায় তাদেরকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ৪-৫জন গুরুতর আহত হওয়ায় তাদেরকে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে মাদ্রাসার পক্ষ থেকে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং-৮৩১, তারিখ-১৮/০৮/২০২৪ইং) দায়ের করা হয়।

মাদ্রাসার শিক্ষকরা তাঁদের অনিয়ম-দুর্নীতির ২২টি অভিযোগ নির্ণয় করেছেন। অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে- সভাপতির নিজস্ব সম্পত্তিতে মাদ্রাসার দুই কোটি ৮৪ লাখ টাকায় একটি মার্কেট নির্মাণ, সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক রোকসানা রিফাত দুই বছর যাবত মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকলেও সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সহায়তায় নিয়মিত বেতন-ভাতাদি উত্তোলন করছেন, ক্লাস না করেও অধ্যক্ষ লাখ লাখ টাকা গ্রহণ ইত্যাদি।

এ বিষয়ে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আমির কুদরত-ই-এলাহী খান ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সোহরাব হোসেন অনেক প্রভাবশালী হওয়ায় অতীতে এই বিষয়ে প্রতিবাদ করেও কোন সুরাহা হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, মাওলানা শওকত আলী, আবুল হোসেন, শবনব আতিকা, মো. এনামুল্লাহ খান, প্রভাষক ইব্রাহিম হোসাইন, শফিকুল ইসলাম, শাহীন আলম, তাহমিনা আক্তার লিপি, মাফরোজা, ফাহমিদা হক, লুৎফুন্নাহার, প্রদর্শক আজিজুন নাহার, সহ-শিক্ষক আলেয়া খানম, শওকত হোসেন, মাসুদুর রহমান, আ. রাজ্জাক হোসাইনী, শহিদুল ইসলাম, মতিউর রহমান প্রমুখসহ অন্যান্য শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *