নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং দেশের চলমান উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি হিসেবে বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম তাঁর নিজস্ব মতামত ও বক্তব্য, দেশবাসীর প্রতি রাজনৈতিক আহ্বান উপস্থাপন করেছেন।
গত শনিবার (২০ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে এ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসাবধানে রাজাকার শব্দটি ব্যবহার করেছেন। রাজাকারের নাতি-পুতি ব্যবহার করেছেন। আমি স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ক্ষমা প্রার্থনা করছি, মাপ চাচ্ছি। সেই সাথে প্রধানমন্ত্রীকে বলবো আপনিও করেন। দেশের কাছে, দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে আপনার ভাবমূর্তি এতো উজ্জ্বল হবে, এতো ওপরে যাবে যে কোনো দিন অতটা ভাবমূর্তি আপনার ছিল না।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম আরো বলেন, আইনমন্ত্রীর প্রতি কারোর আস্থা নাই। আইনমন্ত্রী উপযুক্ত না। আস্থাবান মানুষকে দায়িত্ব দিন। সেদিন আইনমন্ত্রী যখন বলেছেন তোমরা আমার সন্তানের মতন, আমার মনে হয় না তাকে একজনও বলবে তাকে বাবার মতো, চাচার মতো। বাবার মতো চাচার মতো হতে ভাবমূর্তির দরকার, কথাবার্তার দরকার, মানুষের প্রতি ভালোবাসার দরকার। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলবো আপনি এখনই এদেরকে বদলিয়ে উপযুক্ত মানুষকে দায়িত্ব দিন। যারা কোটা বিরোধী, সংস্কারের পক্ষের সাথে আলোচনা করে ন্যায়সঙ্গত সমাধান আনতে পারে।
সরকারের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা কোটা চায় না, সম্মান চায়। সেই সম্মান কী আপনারা দিয়েছেন। সেদিন প্রধানমন্ত্রীর কথায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি যে সম্মান যে দরদ দেখেছি, কাজেতো সেটা দেখা যায় না।
ওবায়দুল কাদেরের বিষয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যেভাবে চিবিয়ে চিবিয়ে কথা বলেন সেটা দেশের মানুষ তা পছন্দ করে না। তার খেলা হবে সেটা পছন্দ করে না। দেশের মানুষ খেলা হবার জন্য দেশ স্বাধীন করেনি। আমি জানি না ওবায়দুল কাদেরকে আপনি (প্রধানমন্ত্রী) ঝেটিয়ে বিদায় করবেন কিনা। কিন্তু দেশের মানুষ চায় আর যাতে দ্বিতীয়বার এইভাবে চিবিয়ে চিবিয়ে কথা বলতে না আসেন।
কারফিউয়ের বিষয়ে বিষয়ে তিনি বলেন, দেশে কারফিউ দেওয়া মানে কেমো দেওয়া। আমি এর নিন্দা জ্ঞাপন করছি। হেলিকপ্টার থেকে বোমা ফেলা এটা কোনো গণতন্ত্র দেশের আচরণ হতে পারে না। কার বুদ্ধিতে হেলিকপ্টার উঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, একাত্তরে যখন বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণ দিচ্ছিলেন তখন সোহরাওয়ার্দীর ওপর দিয়ে হেলিকপ্টার উড়েছিল। সেই হেলিকপ্টারেও বোমা ছিল। তার চেয়ে দেশে জঘন্য হলো।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আপনি অনতিবিলম্বে একটি সর্বদলীয় সম্মেলনের আয়োজন করেন। সবাইকে ডাকেন। শুধু আওয়ামী লীগ বা ১৪ দলের দেশ না। আপনি সবাইকে ডাকেন। দেশের অস্থিতিশীল পরিবেশ একটা শান্তি স্থাপনের জন্য যাকে যাকে প্রয়োজন হয় ডাকেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর বড় ভাই ও সাবেক মন্ত্রী এবং টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের বর্তমান সাংসদ আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, তাঁর ছোট ভাই কালিহাতী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ সিদ্দিকীও বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়া, সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় ও জাতীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।