টাঙ্গাইল জেলায় বন্যায় ১১৪ গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

কালিহাতী গোপালপুর টাঙ্গাইল সদর নাগরপুর পরিবেশ বাসাইল ভূঞাপুর

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। সর্বশেষ যমুনা, ধলেশ্বরী ও ঝিনাই নদীর পানি ধীরে কমতে শুরু করলেও এখনো এসব নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

 

বুধবার, ১০ জুলাই সকাল ৯টায় টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গেল ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ৯ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ঝিনাই নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৮১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ও ধলেশ্বরী নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যায় জেলার গোপালপুর, ভূঞাপুর, কালিহাতী, টাঙ্গাইল সদর, দেলদুয়ার, নাগরপুর ও বাসাইল উপজেলার ১১৪টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বাঁধ উপচে ও সড়ক ভেঙে লোকালয়ে প্রবেশ করছে পানি। ফলে প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বন্যা কবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দির, ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। চরাঞ্চলের অনেকে নৌকায় বা স্বজনদের বাড়ি ও উঁচু জায়গাতে আশ্রয় নিয়েছেন।

এ দিকে বন্যার কারণে গোচারণ ভূমি তলিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে গো খাদ্যের সংকট। চড়া দামে কিনতে হচ্ছে গোখাদ্য। বন্যার পানি উঠায় জেলার ৩৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। পানির নিচে চলে গেছে সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমির পাট, আউস ধান, তিল ও সবজি। এছাড়া, শতাধিক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।

ভূঞাপুর উপজেলার কষ্টাপাড়া গ্রামের মাসুদ বলেন, আজ ৫ দিন ধরে পানিবন্দি। ঘর থেকে বের হলেই পানি। খাওয়া-দাওয়া খুব কষ্ট। রাতে সাপ বিচ্ছুর ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটছে। কাজকর্মও ঠিকমতো করতে পারছি না।

ভূঞাপুরের গাবসারা গ্রামের আশরাফ আলী বলেন, নতুন পানিতে পোকা-মাকড়ের উপদ্রব বেড়ে গেছে। সবার মাঝে ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। খাবার পানির বেশি সমস্যা হচ্ছে।

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম বলেন, জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে। ইতোমধ্যে বন্যাকবলিত উপজেলায় দুই হাজার করে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও ২০ টন জিআর চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আরও ৮শ’ টন চাল ও ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে। পর্যায়ক্রমে বন্যাকবলিতদের মাঝে তা বিতরণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *