ঢাকা-টাঙ্গাইল-সিরাজগঞ্জ মহাসড়কে উত্তরের ঈদযাত্রায় এবারও ভোগান্তির শঙ্কা

কালিহাতী পরিবেশ ফিচার ভূঞাপুর

নিজস্ব প্রতিবেদক: পবিত্র ঈদুল আজহার সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাসড়ক ঢাকা-টাঙ্গাইল-সিরাজগঞ্জ মহাসড়কে এবারও ঈদযাত্রায় যানজটের শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে মহাসড়কে যানজট নিরসনে নানা পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।

 

 

জানা যায়, প্রতি বছর ঈদযাত্রায় উত্তরাঞ্চলগামী মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ে। ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক দিয়ে উত্তরবঙ্গের অন্তত ২৩টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। ঈদে যানজট ও ভোগান্তিকে সঙ্গী করে এ পথ দিয়ে ঘরে ফেরেন মানুষ। ঢাকা থেকে যানবাহনগুলো কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেনের সড়কের সুবিধায় দ্রুত আসতে পারে। কিন্তু এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুতে উঠতে লেন মাত্র দুটি। ২৬ বছরের পুরনো বঙ্গবন্ধু সেতুও দুই লেনের। ফলে ঢাকা থেকে চার লেন ধরে চলা যানবাহন এলেঙ্গায় এসে দুই লেনের মুখে আটকে যাওয়ায় সৃষ্টি হয় যানজট। দুইপাশে দীর্ঘ মহাসড়ক দ্রুতগতিতে পাড়ি দিলেও এই ১৩ কিলোমিটার সড়ক পার হতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। ফলে ঈদ এলে যাত্রী ও চালকদের মনে ১৩ কিলোমিটার পথ আতঙ্ক হয়ে দাঁড়ায়।

বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, গত ঈদযাত্রায় ৪ এপ্রিল থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর ৫৩টি গাড়ি বিকল ও কিছু দুর্ঘটনা ঘটে। যে কারণে শেষ দিকে ঈদযাত্রায় বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটার সড়কে তৈরি হয় যানজট।

এবারও ঈদযাত্রায় একই শঙ্কায় যাত্রী ও চালকরা বলছেন, এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার রাস্তার কাজ এখনো ভোগাচ্ছে। তাই সড়কে নজরদারি বাড়ানোর দাবি তাদের। তবে বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যাত্রীদের যানজট মুক্ত ঈদযাত্রায় তারা সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছেন।

জানা যায়, মহাসড়কে যানজট মুক্ত রাখার জন্য গত ২৬ মে একটি সমন্বয় সভা করেছেন পুলিশ সুপার। প্রতিটি দপ্তরের কাজ আলোচনার মাধ্যমে বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। সেটি ইতোমধ্যেই মাঠপর্যায়ে কাজ চলছে। বড় আশঙ্কা থাকে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার মহাসড়ক। এছাড়াও গত কয়েক বছর ধরে উত্তরবঙ্গের যানবাহন একমুখী করে রাখা হয়। সেটি সেতু থেকে ভূঞাপুরের লিংক রোড দিয়ে এলেঙ্গাতে উঠার জন্য ব্যবস্থা। অপরদিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা যানবাহন সরাসরি সেতুতে উঠার ব্যবস্থা করা হয়।

আব্দুল মোমেন লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ মিজান সারোয়ার বলেন, সাড়ে ১৩ কিলোমিটার মহাসড়কের মধ্যে গত ঈদে ৪ কিলোমিটার ব্যবহারের উপযোগী করে দেওয়া হয়। এবারের ঈদেও নতুন করে আরও ৪ কিলোমিটার ব্যবহারের উপযোগী করা হয়েছে। ঈদের আগেই সেটিকে ব্যবহারের উপযোগী করে দেওয়া হবে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের এবারে খুব একটা সমস্যা হবে বলে মনে করছেন না।

বঙ্গবন্ধু সেতুর সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল বলেন, সেতু দিয়ে যত ফিটনেসবিহীন যানবাহন কম আসবে, ততই দুর্ঘটনা কম ঘটবে। এতে করে যানজটের সম্ভাবনাও কম থাকবে। সেতুর পাশে যত যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকবে ততই যানজটের লক্ষণ থাকে। সেতুর টোল দেওয়ার সময় টাকা ভাংতির জন্য চালকদের যেন অপেক্ষা না করতে হয়। এ বিষয়ে নজর দেওয়ার জন্য চালকদের বিশেষভাবে বলা হচ্ছে।

টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, এ বছরে যানজট মুক্ত রাখার জন্য কয়েকটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পরিবহন চলাচলে নির্বিঘ্ন করতে জেলা পুলিশের সাত শতাধিক সদস্য পালাক্রমে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করবেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *