সুলতান কবির: বাসাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আনারস প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী অলিদ ইসলামের সমর্থক সাগর গংদের বিরুদ্ধে আনারস প্রতিকে ভোট দিতে সংখ্যালঘু ভোটারদের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার (২ জুন) হুমকির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সহকারি রির্টানিং কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন মটরসাইকেল প্রতিকের প্রার্থীর সমর্থক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. ফরিদ মিয়া।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, গত ৩১ মে ও ১ জুন সন্ধ্যা ৭টার পর বাসাইল পৌর শহরের পালপাড়াসহ অন্যান্য হিন্দুপাড়াগুলিতে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী সাগরবাহিনী দ্বারা আনারস মার্কায় ভোট দেয়ার দিয়ে নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সংখ্যালঘু ভোটার হুমকির কথা স্বীকার করেছেন। নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ভয়ে প্রকাশ্যে হুমকির কথা তারা বলতে পারছেন না। তবে হুমকির বিষয়ে তারা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদ জেলা এবং উপজেলা শাখা নেতৃবৃন্দদের জানালে তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
অভিযোগকারী মটর সাইকেল প্রতিকের প্রার্থীর সমর্থক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. ফরিদ মিয়া বলেন, আমাদের একাধিক সংখ্যালঘু সমর্থক ভোটারকে হুমকি দেয়ার অভিযোগ পেয়েই ওই আবেদন করা হয়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে আমাদের সমর্থক সংখ্যালঘু ভোটাররা প্রকাশ্যে হুমকির কথা স্বীকার করছেন না।
আনারস প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী অলিদ ইসলামের সমর্থক অভিযুক্ত সাগর-এর মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও ফোন যায়নি। তবে এ ধরণের অভিযোগ উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি করেছেন আনারস প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী অলিদ ইসলাম।
এ ঘটনায় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদ বাসাইল উপজেলা কমিটির কোন নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ টাঙ্গাইল জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ আনন্দ মোহন দে বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে আনারস প্রতীকের প্রার্থী কাজী অলিদ যেভাবে তার পালিত সন্ত্রাসী সাগর বাহিনী দিয়ে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নিপীড়ন নির্যাতন ও হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। সেই সাথে সাগর বাহিনীর প্রধান সাগর ও তার সঙ্গীদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচারের আওতায় এনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি রির্টানিং কর্মকর্তা শাহরুখ খান জানান, সংখ্যালঘু ভোটারদের হুমকির বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে থানা অফিসার্স ইনচার্জকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, আগামী ৫ জুন বাসাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বাসাইলে ১টি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত নির্বাচনী এলাকায় ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৫১ হাজার ৮৩০জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৭৬ হাজার ১৯৮ আর পুরুষ ভোটার ৭৫ হাজার ৬৩১ জন। এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান ৭ আর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪জন প্রতিদ্বন্দ্ধিতা করছেন।